বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বিট কয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেন এখন সারা বিশ্বের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্রিপ্টোকারেন্সির বিকল্প হিসেবে অনেক দেশ চালু করেছে ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রা’।
ই-কমার্স ও স্টার্টআপের লেনদেন সহজ করতে বাংলাদেশেও ডিজিটাল মুদ্রা চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে বলে বাজেট বক্তৃতায় জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট আইন সংশোধন করে ডিজিটাল মুদ্রা ইস্যুর বিষয়টি যুক্ত করার একটি প্রস্তাবনা সংসদীয় কমিটিতে রয়েছে।
পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট আইনে সংশোধনী প্রস্তাব এরই মধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। সেখান থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে যাওয়ার পর সম্প্রতি তা আটকে দেওয়া হয়েছে। এটা নিয়ে আরও পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি ইস্যুর অনুমতি দিলে ক্রিপ্টোকারেন্সি উৎসাহিত হবে কিনা তা পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, ই-মানিই হলো ডিজিটাল মুদ্রা। বর্তমানে বিকাশ, রকেট, নগদ বা অন্যান্য এমএফএস কোম্পানি ‘ট্রাস্টকাম সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে’ জমা সমপরিমাণ ই-মানি ইস্যু করতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রা ইস্যু শুরু হলে আর আলাদাভাবে সমপরিমাণ টাকা রাখতে হবে না। যদিও বাংলাদেশের বর্তমান অবকাঠামো বাস্তবতায় এটা আইনে যুক্ত হলেও ইস্যু পর্যায়ে যাওয়া অনেক সময়সাপেক্ষ। বৈশ্বিক চাহিদার প্রেক্ষাপটে অনেক দেশ এখন ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রা’ ইস্যু করছে। বাংলাদেশও আইনে সুযোগ রাখার প্রস্তাব করেছে।
৯টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিমধ্যে ডিজিটাল মুদ্রা ইস্যুর বৈধতা পেয়েছে। চীন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১৪টি দেশ পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করেছে। ভারত, তুর্কিয়ে, ব্রাজিল, কানাডা, থাইল্যান্ডসহ ১৬টি দেশ পরীক্ষামূলকভাবে চালুর পর্যায়ে রয়েছে। আর ৪০টি দেশ ঘোষণা করেছে যে তারা গবেষণা পর্যায়ে রয়েছে। তবে ইকুয়েডর ও সেনেগাল ঘোষণা দিয়েছে তারা ডিজিটাল মুদ্রা চালু করবে না। আর যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় অঞ্চল, জাপান এবং যুক্তরাজ্য এ ব্যবস্থা নিয়ে এখনও ভাবনা শুরু করেনি।
বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো ভার্চুয়াল মুদ্রার ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহার বিশ্বজুড়ে বাড়ছে। যে কারণে এর বিকল্প হিসেবে বিশ্বের অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের নিজস্ব মুদ্রার ডিজিটাল সংস্করণ চালু করতে কাজ করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রা (সিডিবিসি) চালু করার মূল উদ্দেশ্য ভার্চুয়াল লেনদেনের ক্ষেত্রে অর্থ আদান প্রদান সহজতর করা এবং স্টার্টআপ ও ই-কমার্স ব্যবসাকে উৎসাহ দেওয়া। আমাদের সরকারের যুগোপযোগী পদক্ষেপের কারণে দেশে ইন্টারনেট ও ই-কমার্সের প্রসার ব্যাপক হারে বেড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রা চালু করার একটি সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।ডি- এইচএ