পুরনো ছবিঅ
ভারতের মহারাষ্ট্রের বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়ক একনাথ সিন্ধে জানিয়েছেন, তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন না। যদিও বুধবার তিনি গুজরাট থেকে পৌঁছে গেছেন আরেক বিজেপি-শাসিত রাজ্য আসামে।
আসামে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপিরই বিধায়ক সুশান্ত বড়গোঁহাই। একনাথ অবশ্য গুয়াহাটি বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে বলেছেন, আমার সঙ্গে মহারাষ্ট্রের আরো ৪০ জন বিধায়ক আছেন।
আমরা বালাসাহেব ঠাকরের শিবসেনা ছাড়িনি, ছাড়বও না।
এককালের জোটসঙ্গী শিবসেনা-বিজেপি ইদানীং পরস্পরের ‘চক্ষুশূল’ হিসেবেই পরিচিত রাজনৈতিক মহলে। বিজেপি এবং শিবসেনার পুরনো সম্পর্ক নতুন করে তৈরির দাবিতে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন একনাথ।
তিনি জানিয়েছেন, শিবসেনা তার প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেবের নীতি ভুলতে বসলেও তারাই পার্টির পুরনো ঐতিহ্য বহন করবেন। তার এই কাজে মহারাষ্ট্রের আরো ৪০ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন একনাথ।
সম্প্রতি শিবসেনার ওই বিদ্রোহী নেতা এবং তার সঙ্গী বিধায়করা গুজরাটে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখানে তাদের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতারা। অন্যদিকে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেও একনাথকে ফোন করে দলে ফেরার অনুরোধ করেন।
উদ্ধবের ফোন পাওয়ার পরই গুজরাট থেকে আসামে চলে আসেন একনাথ এবং তার সমর্থনকারী বিধায়করা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান, বিজেপিই এ ব্যবস্থা করেছে, যেন বিদ্রোহী সেনা বিধায়কদের সঙ্গে শিবসেনা নেতৃত্ব যোগাযোগ করতে না পারে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের বিধান পরিষদের নির্বাচনে শিবসেনা বিধায়কদের বিপথে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। বিধায়কদের ক্ষমতা অনুযায়ী বিজেপির যেখানে চারটি আসন জেতার কথা, সেখানে পাঁচটি আসনে জিতেছিল তারা।
শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত শিবসেনার ভেতরে এই বিদ্রোহের নেপথ্যে বিজেপির উসকানি রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। যদিও মহারাষ্ট্রের বিজেপি প্রধান চন্দ্রকান্ত পাটিল জানান, তাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো খবর নেই। তবে সেনা বিধায়করা যদি বিজেপিতে আসতে চান, তাহলে তিনি তাদের স্বাগত জানাবেন।
মহারাষ্ট্রের প্রভাবশালী নেতা শিন্ধে ভোট-রাজনীতিতে পা দিয়েছিলেন ১৯৯৭ সালে। ২০০৪ সালে প্রথম মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে জেতেন তিনি। এরপর ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটেও জিতেছেন শিন্ধে।
বিধানসভায় একসময় বিরোধী দলনেতার দায়িত্বও পালন করেছিলেন। ২০১৪ সালে বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকার যখন মহারাষ্ট্রে ক্ষমতায়, তখন রাজ্যের মন্ত্রীও হন শিন্ধে।
পরে ২০১৯ সালে নগরোন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী হন তিনি। এমনকি, বিধানসভার দলনেতার দায়িত্বও দেওয়া হয় তাকে। ঘটনাচক্রে বিদ্রোহ ঘোষণার এক সপ্তাহ আগেই উদ্ধবের ছেলে তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী আদিত্যের অযোধ্যা সফরের সঙ্গী হয়েছিলেন শিন্ধে। হঠাৎ করেই এই বিদ্রোহ।
সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে।