কেমন ছিল ক্রনিয়ের জীবনের শেষ দিনগুলো?

অধিনায়ক হিসেবে তিনি ছিলেন বিশ্বনন্দিত। বহু অধিনায়কের আইডল। খেলোয়াড় হিসেবেও দুর্দান্ত। কিন্তু হঠাৎ তার মাথায় কী ঢুকল, লোভে পড়ে জড়িয়ে গেলেন ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে! দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রনিয়ের ক্যারিয়ার এবং জীবন- দুটোই অকালে থেমে গেছে ফিক্সিং কেলেঙ্কারি মাথায় নিয়ে।

২০০০ সালে এক ভারতীয় বুকির সঙ্গে ম্যাচ ফিক্সিং করেন বলে জানা যায়। ক্রিকেট থেকে সারা জীবনের মতো নিষিদ্ধ করা হয় তাঁকে।

ক্রনিয়ে সেই অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেটাও নাকচ করে দেওয়া হয়। এরপর মাত্র ৩২ বছর বয়সে একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান ক্রনিয়ে। ফিক্সিং করে নিষিদ্ধ হওয়া এবং মৃত্যুর মধ্যবর্তী সময়ে ক্রনিয়ের অবস্থা কী হয়েছিল- সেটা এবার জানালেন তাঁর একসময়ের সতীর্থ জন্টি রোডস। বিশ্বখ্যাত ফিল্ডার রোডস সেই সময় দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ক্রিকেটার। ক্রনিয়ের সঙ্গে তার সম্পর্কও ভালো ছিল।

স্মৃতিচারণ করে জন্টি বলেন, ‘আমাদের সবার কাছেই ম্যাচ ফিক্সিংয়ের পুরো বিষয়টাই খুব আকস্মিক ছিল। কী হয়েছিল আমরা বুঝতেই পারছিলাম না! খুব কঠিন ছিল ব্যাপারটা। ওই ঘটনার পর আমি ক্রনিয়ের সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। তাঁকে যখন নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে, আমি তখন অবসর নিয়েছি টেস্ট ক্রিকেট থেকে।  সেই সময় ক্রনিয়ে আমাকে বলেছিল, অবসর না নিতে। বলেছিল আমার জন্য খেলার আরও সুযোগ আছে। আরও কয়েকটা ম্যাচ খেলতে বলেছিল আমাকে। ‘

২০০২ সালে সেই ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রোডসের সঙ্গে কথা হয় দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়কের। জন্টি বলেন, ‘ক্রিকেট খেলতে না পেরে সে খুব কষ্ট পাচ্ছিল। আরও অনেক ক্রিকেটার ছিল যাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তারা এমনভাবে ঘুরে বেড়াত, যেন কিছুই হয়নি! ক্রনিয়ে লজ্জা পেত। সে যে কাজটা করেছিল সেটা নিয়ে লজ্জিত ছিল। প্রথম কয়েক মাস সে নিজেকে ঘরের মধ্যে বন্দি করে রেখেছিল। যে কারণে তার ওজন বেড়ে যায়। ‘

জন্টি আরও বলেন, ‘ওই সময় কয়েকজন বন্ধু হয়তো হ্যান্সির সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি যেত। কিন্তু হ্যান্সি কখনও বের হতো না। প্রায় একবছর ফিক্সিংয়ের ঘটনা নিয়ে সে মানসিক যন্ত্রণার মাঝে ছিল। এরপর একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেয়। ধীরে ধীরে সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছিল। ওই সময় ফোনে কথা হতো। বলত, সে ভালো আছে। কিন্তু আমার সেটা মনে হতো না। একদিন আমি তাকে ফোন করি। সেদিন বলেছিল, তার মনে হচ্ছে যে, এবার এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। এক সপ্তাহ পর সে সত্যিই এগিয়ে গেল!’

LEAVE A REPLY