ইউরোপে সম্প্রতি শুরু হওয়া গ্রীষ্মে পানির তীব্র সংকট হতে পারে। সংশ্লিষ্ট গবেষকরা বলছেন, সম্প্রতি এর বিভিন্ন আভাস দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি বিপর্যয়কর হতে পারে।
ইউরোপে অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি বৃষ্টির অভাব দেখা দিয়েছে।
এর ফলে দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলোয় পানির মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে।
সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইড্রোলজির অধ্যাপক গিউলিয়ানো ডি বালদাসারে বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি মারাত্মক হবে। ’
সুইডিশ গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক খরার কারণে এখন রাতের বেলায় ইতালির বেশ কয়েকটি শহরে পানির পাইপ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
পর্তুগালও ব্যাপক খরার মধ্যে রয়েছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হলেও বৃষ্টির দেখা মিলছে না। গত মঙ্গলবার পর্তুগালের জনগণকে পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
স্পেনে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বড় ধরনের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি শেষ হওয়া শীত মৌসুমে অস্বাভাবিক শুষ্কতার কারণে মার্চের প্রথম দিকে স্পেনের পানির মজুদ রেকর্ড মাত্রায় কমে যায়।
বিষয়টি নিয়ে সুইডেনের জাতীয় দৈনিক এসভিডি স্টকহোম ইউনিভার্সিটির হাইড্রোলজি বিষয়ের অধ্যাপক জর্জিয়া ডেস্টনির সঙ্গে কথা বলে। এ সময় অধ্যাপক ডেস্টনি বলেন, ‘কম বৃষ্টি এবং উষ্ণ আবহাওয়াসহ এই অবস্থা চলতে থাকলে অবশ্যই তা ভয়াবহ হতে পারে। ইউরোপে গ্রীষ্মের প্রথম দিকেই আবহাওয়ার এই প্রবণতা মোটেও স্বাভাবিক নয়। ’
তুষারপাতহীন শীত মৌসুমের কারণে এবার দক্ষিণ ইউরোপের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে কম স্বচ্ছ জল প্রবাহিত হয়েছে। এ কারণেও বসন্ত মৌসুমে ইউরোপের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে পানির অভাব দেখা দেয়।
অধ্যাপক ডেস্টনি বলেন, পরিস্থিতির সাময়িক সমাধান করতে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ইউরোপের দেশগুলো ভবিষ্যতের জন্য আরো বড় সমস্যার পথ তৈরি করে। তারা সংকট মোকাবেলায় বিভিন্ন ঝুঁকি নিয়ে থাকে। পানীয়-জল অন্য জায়গা থেকে ট্রাকে সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। ফসল বাঁচাতে কৃষিতে ব্যাপক সেচের প্রয়োজন হয়। খরার সময় তাৎক্ষণিক সমাধান হিসেবে ক্রমহ্রাসমান মজুদ থেকে আরো পানি তোলা হলে স্বাদু পানির জলাশয়গুলো আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অধ্যাপক বালদাসারে এবং ডেস্টনি উভয়েই বিশ্বে আসন্ন ভয়াবহ আবহাওয়ার জন্য আরো বাস্তবসম্মত প্রস্তুতির পক্ষে। এ জন্য পানির মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগে আরো দায়িত্বশীলতার প্রয়োজনীয়তার কথা জানান তারা।