ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আরো তিক্ত সম্পর্কের মধ্য দিয়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয়ের কাছ থেকে সহায়তা নিচ্ছে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকা শ্রীলঙ্কা।
গতকাল সোমবার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের সঙ্গে দেখা করেছে শীর্ষ পর্যায়ের একটি মার্কিন প্রতিনিধিদল। শ্রীলঙ্কার চলমান সংকট মোকাবেলায় করণীয় প্রসঙ্গে আলোচনা করেছে দলটি।
কলম্বোয় নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জুলি জে চাং এক বিবৃতিতে জানান, চার দিনের সফরে প্রতিনিধিদলটি শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক প্রতিনিধি, অর্থনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবে।
দেশটির ভবিষ্যতের জন্য একটি টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত দুই সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসার জন্য ১২ কোটি ডলার, দুগ্ধ শিল্পের জন্য দুই কোটি ৭০ লাখ এবং মানবিক সহায়তায় প্রায় ৬০ লাখ ডলার দেওয়ার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য আরো ৬০ লাখ ডলার এবং আর্থিক সংস্কারের জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে দেশটি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদলের কলম্বো সফরের মধ্যেই রাশিয়া থেকে সরাসরি জ্বালানি ক্রয় ও অন্যান্য কূটনৈতিক বিষয়ে আলোচনা করতে শ্রীলঙ্কার দুই মন্ত্রীর গতকাল মস্কো যাওয়ার কথা।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বব্যাপী তেলের দাম এখন আকাশচুম্বী। যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা মস্কো থেকে জ্বালানি তেল আমদানি কমিয়ে রাশিয়ার আর্থিক প্রবাহ কমাতে চাইছে। অন্যদিকে রাশিয়া তার অপরিশোধিত তেল কম দামে বিক্রি শুরু করেছে। সেই সুযোগ নিতে চাইছে শ্রীলঙ্কা।
গত মাসেই নিজেদের একমাত্র শোধনাগার ফের চালু করতে রাশিয়া থেকে ৯০ হাজার মেট্রিন টন অপরিশোধিত তেল কেনে শ্রীলঙ্কা। তবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে থাকায় নগদ অর্থেও তেল কেনা সম্ভব নয় বলে জানান শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘অন্য কোথাও পাওয়া না গেলে আবারও রাশিয়া থেকে জ্বালানি আনতে হবে আমাদের। ’
স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানিসহ সব নিত্যপণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা বর্তমানে পাঁচ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণে আছে। প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের ঋণ পরিশোধ স্থগিত করা হয়েছে।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া