করোনায় একদিনে ৯ জনের মৃত্যু

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিসহ চারদিনে করোনায় দেশে ১৭ জনের মৃত্যৃ হয়েছে। এরমধ্যে মঙ্গলবারই মারা গেছেন নয়জন। সবমিলিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ২১২ । চারদিনে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৯৩০ জন। এরমমধ্যে সবশেষ ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫৬। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা হয়েছে ১৯ লাখ ৯১ হাজার ৩১ জন। গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৫৪২ জন। সবমিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ১৫ হাজার ৮৬০ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।

ঈদুল আজহায় কুরবানীর হাট থেকে শুরু করে ঘরে ফেরা কোথাও স্বাস্থবিধি মানতে দেখা যায়নি। স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এভাবে উদাসীন চলাফেরায় আগামী কয়েকদিনে সংক্রমণ বাড়তে পারে। যাদের শরীরে করোনা উপসর্গ রয়েছে তাদের দ্রুত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন তারা।

মঙ্গলবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৭৬১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৫৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আগের দিনের চেয়ে নমুনা পরীক্ষা বাড়ায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন ৩ হাজার ৯৫২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫২১ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। আর ওইদিন সারা দেশে মৃত্যু হয়েছিল ৩ জনের। গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ। নতুন শনাক্ত ৬৫৬ জনের মধ্যে ৫৭৬ জনই ঢাকা জেলার বাসিন্দা। দেশের মোট ১৩ জেলায় গত এক দিনে নতুন রোগী ধরা পড়েছে। ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৩টি এলাকায় গত একদিনে কারও নমুনাই পরীক্ষা করা হয়নি। অথচ ঈদের ছুটির আগে দেশের সব জেলাতেই পরীক্ষার জন্য নমুনা আসছিল। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া সাতজনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগে এক জন করে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে চারজন পুরুষ, পাঁচজন নারী। একজনের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, দুজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, বাকি সবার বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি।

ঈদের আগের দিন শনিবার করোনা আক্রান্তদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়। এ সময় ৯৩৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ছিল ১৫ দশমিক ৫৯। আগের দিন এ হার ছিল ১৬ দশমিক ৮২। মারা যাওয়াদের মধ্যে নারী দুজন ও একজন পুরুষ। এদের মধ্যে ঢাকায় দুজন ও বরিশালে একজন মারা যায়।

ঈদের দিন রোববার করোনায় দুজনের মুত্যু হয়। এদিন শনাক্ত হয় ৮১৪ জন। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৫ দশমিক ৫৯। ঈদের দিন মারা যাওয়া দুজনই পুরুষ। এদের একজন ঢাকার ও অপরজন ময়মনসিংহের। ঈদের পরদিন সোমবার করোনায়া আক্রান্ত হয়ে দেশে তিনজনের মৃত্যু হয়। ওই দিন শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫২১। শনাক্তের হার ছিল ১৩ দশমিক ১৮।

বাংলাদেশে প্রথম করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে করোনার সংক্রমণের চিত্রে কয়েক দফা ওঠানামা করতে দেখা গেছে। করোনা পরিস্থিতি প্রায় সাড়ে তিন মাস নিয়ন্ত্রণে থাকার পর গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। চলতি বছরের ফেব্র“য়ারির মাঝামাঝি থেকে নিয়মিতভাবে রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার কমে। ২৫ মার্চ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০০-এর নিচেই ছিল। এর পর থেকে তা আবার বাড়তে থাকে। ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে বিধিনিষেধও। দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সব জায়গায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। মাস্ক না পরলে শাস্তি দেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY