লিগ জিতে পেছনে ফেললাম কলিনদ্রেসকে

ড্যানিয়েল দারুণ খেলে। আমিও বোধ হয় খারাপ খেলি না (হাসি…)। এবার লিগ জিতে ওকে পেছনে ফেলে দিলাম। লড়াইটা বল প্লেয়ার ও ভালো খেলোয়াড়দের সঙ্গে হলে সব সময় উপভোগ্য হয়।অ-অ+

প্রশ্ন : লিগের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের কাছে হারের পর হ্যাটট্রিক শিরোপার স্বপ্ন কি দেখেছিলেন সেদিন?

রবসন রোবিনহো : সত্যি বললে, ওই ম্যাচটা আমরা মোটেও ভালো খেলিনি। তার আগে ফেডারেশন কাপ বয়কট করেছিল কিংস। লিগ শুরুর ম্যাচে আমাদের ফোকাস নড়ে গিয়েছিল। তা ছাড়া ওই মাঠের (টঙ্গী স্টেডিয়াম) অবস্থাও ভালো ছিল না।

তবে ওই হার অনেক দিক থেকে ইতিবাচক ছিল। সতর্ক সংকেত হিসেবেই নিয়েছিলাম আমরা এবং দল হিসেবে জেগে ওঠার তাগিদ অনুভব করেছিলাম সবাই। বুঝেছিলাম, লিগে এবার কঠিন লড়াই হবে এবং শিরোপা চাইলে ওই লড়াইয়ের জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।

প্রশ্ন : লড়াইটা কি সত্যিই কঠিন ছিল?

রোবিনহো : এবার অনেক দল ভালো খেলেছে। ছোট দলও নামি ক্লাবকে আটকে দিয়েছে। আমরা মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্টের (স্বাধীনতা কাপ) শিরোপা হারিয়েছি আবাহনীর কাছে। পরের টুর্নামেন্টে আমরা খেলিনি, সেটিও জিতেছে আবাহনী। ওই দলে ড্যানিয়েল (কলিনদ্রেস) ফিরেছে, এ ছাড়া ডরিয়েলটন ও রাফায়েল শক্তি বাড়িয়েছে। শেখ জামাল, মোহামেডান, সাইফ স্পোর্টিং, চট্টগ্রাম আবাহনীও হারাতে পারে যেকোনো প্রতিপক্ষকে। নিঃসন্দেহে এটি আগেরবারের চেয়ে কঠিন লিগ ছিল।

প্রশ্ন : কিংসে আগে খেলে যাওয়া বিশ্বকাপার ড্যানিয়েল কলিনদ্রেসের কথা বলেছেন। ঠিক তাঁর জায়গাটিই নিয়েছেন আপনি। ঢাকা মাঠে এই ব্যক্তিগত লড়াইটা কেমন উপভোগ করেছেন?

রোবিনহো : ড্যানিয়েল দারুণ খেলে। আমিও বোধ হয় খারাপ খেলি না (হাসি…)। এবার লিগ জিতে ওকে পেছনে ফেলে দিলাম। লড়াইটা বল প্লেয়ার ও ভালো খেলোয়াড়দের সঙ্গে হলে সব সময় উপভোগ্য হয়। নিজে চ্যালেঞ্জ অনুভব করি এবং এই লড়াই দেখে দর্শকও আনন্দ পায়।

প্রশ্ন : তবে এবার আপনার গোলসংখ্যা অনেক কমে গেছে। আগেরবারের শীর্ষ গোলদাতা (২১) এই লিগে করেছেন মাত্র ১৩ গোল!

রোবিনহো : এর কারণ হলো, প্রথম লেগে আমাদের কোনো ‘নাম্বার নাইন’ ছিল না। তাই প্রতিপক্ষ খুব সহজে আমাকে টার্গেট করত। দু-তিনজন মিলে আমাকে আটকে রাখার চেষ্টা করেছে। আরেকটি কারণ হলো, আগেরবার আমার গোলে রাউলের (অস্কার বেসেরা) কিছু অ্যাসিস্ট ছিল, ফরোয়ার্ড লাইনে আমাদের ভালো বোঝাপড়াও তৈরি হয়েছিল। তার ওপর জোনাথন ফার্নান্দেজও ভালো বল জোগান দিয়েছিল ফরোয়ার্ড লাইনে। এবার তাদের মিস করেছি। ফিরতি লেগে মিগেল (ফিগেইরা) এলেও সে খেলে ‘নাম্বার টেন’ পজিশনে এবং ওর গোল করার দক্ষতাও আছে, আমি বরং ওকেই গোল বানিয়ে দিয়েছি।

প্রশ্ন : ‘নাম্বার নাইন’ মানে বক্সের স্ট্রাইকারের অভাব কি এবার খুব ভুগিয়েছে আপনাদের?

রোবিনহো : একজন ভালো স্ট্রাইকার থাকলে দলের ভেতর কম্বিনেশনটাও ভালো হয়। তখন প্রতিপক্ষ আমাকেও টার্গেট করতে পারে না। পাশাপাশি তার সঙ্গে আমার ভালো তালমিল হলে গোলের সুযোগও তৈরি হবে বেশি। এবার সেরকম স্ট্রাইকার না থাকায় অন্যরাও ভালো খেলেছে, সবাই গোল করার চেষ্টা করেছে এবং গোলও করেছে। বিশেষ করে স্থানীয় ফুটবলাররা গোল পেয়েছে। সাইফের বিপক্ষে যেমন দুটো গোলই লোকাল প্লেয়ারদের। তাই বলছি, লিগের লড়াইটা কঠিন হলেও আমাদের দলে অনেক বৈচিত্র্য ছিল।

প্রশ্ন : স্থানীয় ফুটবলে সব জেতা হয়েছে কিংসের। এখন নিশ্চয়ই আন্তর্জাতিক ফুটবলে সাড়া ফেলতে চাইবে।

রোবিনহো : এএফসি কাপে দুইবার চেষ্টা করেও আমরা পারিনি। গতবার নিজেদের ভুলের মাসুল দিয়েছি আমরা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লড়াইয়ের জন্য আমাদের ভালো ‘নাম্বার নাইন’ দরকার।    

প্রশ্ন : অনেকে বলেন, স্থানীয় ফুটবলারদের মান কমে যাওয়ায় এএফসি কাপে ক্লাবের স্বপ্নভঙ্গ হয়।

রোবিনহো : আমি তা মনে করি না। তুলনা করলে ভারতের স্থানীয় ফুটবলাররা হয়তো একটুখানি এগিয়ে থাকবে। সেটা আমরা দল হয়ে পুষিয়ে দিতে পারি। জাতীয় দলের সেরা ফুটবলাররা কিংসেই খেলে।

LEAVE A REPLY