ভারতে অবিবাহিত নারীদের ২৪ সপ্তাহে গর্ভপাতের অনুমতি

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের কাছে ২৫ বছর বয়সী এক জন অবিবাহিত নারী তার ২৩ সপ্তাহ ৫ দিনের গর্ভাবস্থা থেকে মুক্তি পেতে গর্ভপাতের আবেদন জানিয়েছিলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার গর্ভপাত নিয়ে অন্তর্বতীকালীন নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশে অবিবাহিত নারীদের গর্ভবতী অবস্থায় লিভ-ইন সম্পর্কে থেকে বের হওয়ার ২৪ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছে ভারতের শীর্ষ আদালত।  

দিল্লি এইমসের এক বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ডের সঙ্গে আলোচনার পর শীর্ষ আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো ঝুঁকি ছাড়াই গর্ভপাত করা যেতে পারে।

বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ওবিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই বিষয়ের ওপর দিল্লি হাইকোর্ট ‘অযথা’ নিষেধাজ্ঞামূলক পদক্ষেপের কথা বলেছে। গতকালের পর্যবেক্ষণে বিশেষভাবে অবিবাহিত নারীদের ওপর জোর দিয়েছে আদালত।

২০২১ সালের ৩ ধারার সংশোধনী অনুযায়ী মেডিক্যাল টার্মিনেশন অব প্রেগন্যান্সি অ্যাক্টে ‘স্বামী (হাজব্যান্ড)’-র পরিবর্তে ‘সঙ্গী (পার্টনার)’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছিল। অবিবাহিত নারীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্যই এই আইন সংশোধন করা হয়েছিল।  

অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে শীর্ষ আদালত বলেছে, অবিবাহিত নারী হওয়ার কারণে আবেদনকারীকে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা উচিৎ নয়। দিল্লি আদালত জানিয়েছিল, অবাঞ্ছিত গর্ভধারণের অনুমতি দেওয়া হলে তা চেতনার পরিপন্থী হবে।

সুপ্রিম কোর্টের কাছে ২৫ বছর বয়সী এক জন অবিবাহিত নারী গর্ভপাতের আবেদন জানিয়েছিলেন। লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর পারস্পরিক সম্মতিক্রমে তিনি গর্ভবতী হয়েছিলেন। দিল্লি হাইকোর্টে গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে আবেদন জানালেও আদালত তা খারিজ করে দিয়েছিল।  

দিল্লি হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, যৌথ সম্মতির ভিত্তিতে যদি কোনো নারী গর্ভবতী হয়ে যান, তবে ২০০৩ সালের আইন সেই গর্ভবস্থাকে অনুমোদন করে না।

গতকালের রায়ে ভারতের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, নারীর যদি প্রাণের কোনো ঝুঁকি না থাকে তবে তিনি চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে গর্ভপাত করাতে পারবেন এবং তার রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে হবে।  

বর্তমান সময়ে প্রগতিশীল চিন্তাধারা থেকে আইনে বৈধতা ছাড়াই অনেকে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার সিদ্ধান্ত নেন এবং পরবর্তীকালে সম্পর্কে কোনো সমস্যা হলে বেরিয়ে আসেন। সেক্ষেত্র সম্পর্কে থাকা নারীদের অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাদের জন্য এই রায় দৃষ্টান্তমূলক বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
সূত্র: এনডিটিভি।

LEAVE A REPLY