ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত : আকবর আলি খান

‘ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ’ গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান। তিনি বলেন, ‘যে দেশে জনগণ সরকারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে সেটি হলো গণতন্ত্র। যে দেশে সরকারের ওপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ নেই তা ভোট হোক আর যাই হোক সেটিকে প্রকৃত গণতন্ত্র বলা চলে না। এই দিক থেকে দেখতে গেলে আমাদের দেশে গণতন্ত্র গড়ার প্রয়োজন রয়েছে।

আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক স্মারক বক্তৃতায় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রয়াত অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মারক বক্তৃতার আয়োজন এমাজউদ্দীন আহমদ রিসার্চ সেন্টার।

আকবর আলি বলেন, ‘গণতন্ত্র গড়ার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে এমাজউদ্দিন আহমদের কাছে। যিনি লিখেছেন, যিনি এই সম্বন্ধে বলেছেন এবং যিনি এই বিষয়ে অনুশীলন করেছেন তাঁর কাছে আমাদের বার বার ফিরে যেতে হবে। ’

চার দশকের বেশি সময় যাবত শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদের বর্ণাঢ্য শিক্ষকতা জীবন-কর্ম তুলে ধরেন আকবর আলি খান।  
তিনি বলেন, এমাজউদ্দীন স্বাধীনচেতা মানুষ ছিলেন। তিনি প্রশাসনের কাছে কখনো নতি শিকার করেনি। প্রয়োজন পড়লে তিনি কলেজ পরিবর্তন করেছেন কিন্তু নতি স্বীকার করেননি। এই বিষয়গুলো আজকের যারা শিক্ষক আছেন তাদের মনে রাখা প্রয়োজন।

আকবর আলি বলেন, গণতন্ত্র ছাড়া ধর্মনিরপেক্ষতা সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়নও সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রেক্ষিত তুলে ধরে সাবেক অর্থ সচিব আলি আকবর খান বলেন, ‘এমাজউদ্দীন আহমদের সময়ে পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষকের অভাব ছিল। কিন্তু শিক্ষার মান অত্যন্ত উঁচু ছিল। আর আজকে আমাদের এখানে অবকাঠামোর অভাব নেই, দালান-কোঠা বিশ্ববিদ্যালয় ভরে গেছে। আমাদের বইয়ের অভাব নেই, লাইব্রেরির অভাব নেই, শিক্ষকের অভাব নেই। শোনা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কোনো বিভাগে এত শিক্ষক আছেন যে পড়ানোর মতো কোর্স নেই এবং ভাগাভাগি করে একজন শিক্ষক সারা বছরে একটি কোর্স পড়াতে পারলে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন। অথচ এমাজউদ্দীন সাহেব যখন পড়াশোনা করেছেন, তখন শিক্ষকেরা দিনে তিন-চারটা করে ক্লাস নিতেন, কিন্তু পড়াশোনার মান কমেনি। ’

অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুমের সভাপতিত্বে ও কবি আবদুল হাই শিকদারের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক লুতফর রহমান, অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাসরিন, অধ্যাপক তারেক ফজল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

LEAVE A REPLY