আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন মডেল ও অভিনেত্রী শান্তা পাল। মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ প্রতিযোগী এই তরুণী প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শান্তা লেখেন, ‘সুইসাইড? মিস ইউনিভার্স। নাম সব মোবাইলে প্রমাণ আছে। সব রেকর্ড করে রেখে দিয়েছি আমি। আমি অনেক এন্টিডিপ্রেশন (অবসাদ কাটানোর ওষুধ) নিচ্ছি। কিন্তু লাইফ রিস্ক নিয়ে কোন মেডিসিন নেব? আমাকে ধোঁকা দিয়ে কেস উইথড্রয়ের পেপারে সাইন করে নেওয়া হয়েছে। ’
এর পরের পোস্টেই রাজধানীর বাসাবোর একটি হাসপাতালে অবস্থানের কথা জানান শান্তা।
বর্তমানে বাসাবো-তে থাকছেন এ মডেল-অভিনেত্রী।
শনিবার যোগাযোগ করলে শান্তা জানান, এ মুহূর্তে হাসপাতালের বেডে শুয়ে স্যালাইন নিচ্ছেন। ডিপ্রেশনে ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে তার।
আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে ফেসবুকে পোস্টের কারণ জানতে চাইলে শান্তা পাল জানান, প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে ক্ষোভে-হতাশায় আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
যুগান্তরকে এ মডেল-অভিনেত্রী আরও বলেন, যেখানে আমার ভালো কাজের কোনো মূল্যায়ন নেই, যেখানে অনিয়মকারীরা প্রতিষ্ঠা পায়, পুরস্কার জিতে। সেখানে আমাদের মতো মডেল-অভিনেত্রীদের বেঁচে থাকা আর না থাকা মূল্যহীন। তাই দুঃখে কষ্টে ফেসবুকে আত্মহত্যার করব বলে লিখেছি।
কেমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন জিজ্ঞেস করলে তিনি জানালেন, ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২১’ প্রতিযোগিতায় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলাম। সেখানে অডিশন ছাড়াই এক ব্যাংকের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রেমিকাকে নির্বাচিত করা হয়। এই ঘটনায় আমি ঢাকা মহানগর আদালতে মামলা পর্যন্ত করেছি। কিন্তু আমাকে ভুল বুঝিয়ে একটি রাজনৈতিক চক্র আমার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মামলা উঠিয়ে নেয়। একজন শিল্পী হিসেবে আমি এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে যুগান্তরকে একটি ভিডিওবার্তাও দিয়েছেন শান্তা পাল।
ভিডিওতে শান্তা অভিযোগ করেন, ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২১’ প্রতিযোগিতায় একজন প্রতিযোগী ছিলাম আমি। সেখানে শুধু আমার সঙ্গে নয়; আরও ৪-৫জন প্রতিযোগীর সঙ্গে আনফেয়ার করা হয়েছে। গোটা প্রতিযোগিতাই পূর্বপরিকল্পিত। এ নিয়ে সে সময় বাংলাদেশ ও দেশের বাইরে অনেক গণমাধ্যমকে আমি বিষয়টি জানিয়েছিলাম। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে একটি ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে মামলা করি। এরপর থেকে নানা হুমকি-ধামকি পাচ্ছি। আমি তাদের এসব আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।
এরপর শান্তা পাল বলেন, প্রতিযোগিতার ফাইনালের আগেই মডেল তানজিয়া জামান মিথিলাকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট জায়গায় ইমেইলে তার নাম পাঠিয়ে দেওয়া হয়। একটা প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে কী করে বিজয়ীর নাম ঘোষণা হয়! আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
শান্তা বলেন, এসব কারণে আমি হুমকি-ধামকি পাচ্ছি। আমার জীবন এখন ঝুঁকিতে আছে। ওরা আমাকে অনেকবার থ্রেট দিয়েছে। ওরা মামলাটাকে কীভাবে যেন বন্ধ করে দিয়েছে। আমি দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অনুরোধ করব, মামলাটা যেন পুনরায় চালু করে। একটা সুষ্ঠু বিচার যেন পাই আমরা। এসব কারণে আমি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি।
উল্লেখ্য, ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২১’ প্রতিযোগিতায় অনিয়মের অভিযোগ এর আগেও তুলেছিলেন শান্তা।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
সে সময় তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ অডিশনে আমি প্রায় চার ঘণ্টা ছিলাম। আমার সঙ্গে আরও ছয়জন ছিলেন। মাঝে হঠাৎ দেখি আমাদের সিনিয়র একজন মডেল ভেতরে ঢুকলেন। এর পর বের হয়ে তিনি আরটিভির ক্যামেরার সামনে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। তিনি যা বললেন তা শুনে আমি অবাক। তিনি নাকি প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছেন!’
শান্তা আরও বলেন, অডিশনে আমার সিরিয়াল ছিল ১৯২, আর ওই প্রতিযোগীর ২০০’র ওপরে। তাহলে তিনি কীভাবে আগে অডিশন দিলেন?।
সেখানে শান্তা পালের মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন শফিক ইসলাম।
তিনি বলেছিলেন, যারা বাদ পড়েছে, তারা নিজেদের প্রথম পঞ্চাশে দেখতে না পেয়ে হিংসায় এই ধরনের মিথ্যাচার করছে। বিশেষ করে একজন মডেলই এই অভিযোগ করছে। তার মানসিক সমস্যা আছে। এই অনুষ্ঠান টিভিতে দেখানো হবে। অডিশনের ভিডিওসহ সব প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।