গ্রেপ্তার অনুব্রত কি একই জেলে আসবে, জানতে চান পার্থ

গরুপাচার মামলায় পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে আটকের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। প্রেসিডেন্সি জেলের ‘পহেলা বাইশ’ ওয়ার্ডের দুই নম্বর সেলের বাইরে হাঁটাচলা করছিলেন সেখানকার বন্দি রাজ্যের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এমন সময় তিনি খবর পান, ‘অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার’।

বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি আটকের খবর পার্থের কানে পৌঁছে দেন কারারক্ষীরা।

খবর শুনেই ঘাড় ঘুরিয়ে রক্ষীদের পার্থ জিজ্ঞাসা করেন, অনুব্রত কি এই জেলেই আসবে?

শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’ মামলায় গত ২২ জুলাই শুক্রবার পার্থর নাকতলার বাড়িতে নাটকীয়ভাবে হানা দিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেদিন সকালে সাড়ে ৭টা নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পার্থর বাড়ি ঘিরে ফেলেছিল তদন্তকারী সংস্থা। ওই দিনই মধ্যরাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

পরের দিন ২৩ জুলাই শনিবার সকালে পার্থকে বাড়ি থেকে বের করেন তদন্তকারীরা। তার পর যত তদন্ত এগিয়েছে, ততই পরতে পরতে নাটকীয় মোড় নিয়েছে ঘটনাপ্রবাহ। বর্তমানে পার্থর ঠিকানা প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার।

২০ দিনের মাথায় খানিকটা একই কায়দায় বাড়ি থেকে অনুব্রতকে ধরে আরেক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বোলপুরে তৃণমূলের ‘কেষ্ট’র বাড়ি ঘিরে ফেলেন সিবিআই কর্মকর্তারা।  

ঘণ্টাখানেক পর গরুপাচার মামলায় তৃণমূলের ‘দাপুটে নেতা’কে আটক করে গাড়িতে তোলেন তারা। বর্তমানে ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন অনুব্রত। গভীর রাতে অনুব্রতকে কলকাতার নিজাম প্যালেসে (যেখানে সিবিআই দপ্তর) নিয়ে যায় সিবিআই। গ্রেপ্তারের পর প্রথমে নির্বাক থাকলেও পরে জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে যাওয়া-আসার পথে একাধিক বার মুখ খুলতে দেখাএগছে পার্থকে।  

কিন্তু গরুপাচার-কাণ্ডে গ্রেপ্তারের পর ‘মুখর’ অনুব্রত একেবারে ‘চুপ’ হয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ হুগলির ধনেখালিতে যানজটে আটকে যায় সিবিআইয়ের গাড়ি।  

যানজটে আটকে থাকার সময় সংবাদিকরা অনুব্রতের গ্রেপ্তারি নিয়ে তাকে নানা প্রশ্ন করতে থাকেন। সে সব প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে সামনের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলেন অনুব্রত। কখনো তোয়ালে দিয়ে মুখ মোছেন, পানি খান, হাই তোলেন, মাথা এলিয়ে দেন গাড়ির সিটে। গাড়ির কাচের ওপার থেকে ছুটে আসা সাংবাদিকদের লাগাতার প্রশ্ন শুনে এক বার হেসেও ফেলেন।  

গ্রেপ্তারের পর পার্থকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর পাশাপাশি তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে। অনুব্রতর বিরুদ্ধেও সেই একই পথে দল হাঁটবে কি না, এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।
সূত্র: আনন্দবাজার।

LEAVE A REPLY