নারী চিকিৎসককে হত্যা : একাধিক সম্পর্ক নিয়েই শুরু হয় দ্বন্দ্ব

নিহত জান্নাতুল নাঈমা সিদ্দিক

চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিককে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় মূলহোতা মো. রেজাউল করিম রেজা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম রশিদুল আলম তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন।

এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসক জান্নাতুলের সঙ্গে ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় রেজাউলের। ২০২০ সালের অক্টোবরে উভয়ের পরিবারকে না জানিয়ে তারা কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন। পরে রেজাউলের সঙ্গে একাধিক নারীর সম্পর্ক আছে বলে জানতে পারেন ওই চিকিৎসক। তিনি বিষয়টি নিয়ে রেজাউলের সঙ্গে বিভিন্ন সময় কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

চিকিৎসক জান্নাতুলের জন্মদিন ছিল ১২ আগস্ট। এর আগেই গত ১০ আগস্ট জন্মদিন উদযাপনের কথা বলে তাকে পান্থপথের ফ্যামিলি অ্যাপার্টমেন্ট হোটেলের ৩০৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান রেজাউল। সেখানে অন্য নারীর সঙ্গে রেজাউলের সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। একসময় রেজাউল তার ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে চিকিৎসক জান্নাতুলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। পরে গলা কেটে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে তিনি গোসল করে গায়ের রক্ত ধুয়ে ফেলেন। এরপর জান্নাতুলের মোবাইল ফোন নিয়ে বাইরে থেকে ওই কক্ষে তালা দিয়ে চলে যান তিনি।

হত্যাকাণ্ডের পর কলাবাগান থানায় নিহত চিকিৎসক জান্নাতুলের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমে হোটেলের সিসি ক্যামেরার ভিডিও, মোবাইল ফোনের কললিস্ট ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৭-এর সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকার একটি মেস থেকে রেজাউলকে গ্রেপ্তার করেন। চট্টগ্রাম থেকে রেজাউলকে গ্রেপ্তারের সময় হত্যাকাণ্ডের সময় তার পরনে থাকা রক্তমাখা গেঞ্জি, মোবাইল ও ব্যবহৃত ব্যাগ এবং জান্নাতুলের মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

LEAVE A REPLY