পরমাণু যুদ্ধ হলে মারা যাবে ব্রিটেনের ৯০% মানুষ! কম ঝুঁকিতে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া

ছবি: গেটি ইমেজেস

যদি রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ হয় তবে ব্রিটেন মারাত্মক ধ্বংসের মুখে পড়বে। নতুন এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, পারমাণবিক সংঘাত হলে দুর্ভিক্ষে পাঁচ বিলিয়ন মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। তবে অস্ট্রেলিয়া এবং আর্জেন্টিনা এই বিপর্যয় থেকে বেঁচে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। কিন্তু যুক্তরাজ্যের ৯০ শতাংশ মানুষ অনাহারে মারা যাবে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম মেট্রো আজ মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়।

নেচার ফুড জার্নালে প্রকাশ হওয়া গবেষণার গবেষক অধ্যাপক অ্যালান রোবক বলেছেন, ‘পারমাণবিক যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব যে ভয়াবহ হবে তা সবাই বোঝে, যেমনটি আমরা হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে দেখেছি। আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, জলবায়ু এবং কৃষিতে প্রভাবের কারণে বিশ্বের বাকি অংশে আরো ১০ গুণ মানুষ মারা যেতে পারে। ’

সহজভাবে বললে, বিস্ফোরণের ফলে কালি দিয়ে বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগ ঢেকে যাবে। ফলে সূর্য দেখা যাবে না। যার ফলাফল হিসেবে বিশ্বব্যাপী ফসল উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কৃষি ও খাদ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে।  

পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন দেশগুলোর মধ্যে ব্রিটেন অন্যতম। তাই এটা খুবই স্বাভাবিক যে পুতিন যদি পারমাণবিক হুমকি দেন তাহলে ব্রিটেন রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে জড়াবে। যুক্তরাজ্যসহ ৯টি দেশ ১৩ হাজারেরও বেশি পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে।

অনলাইন টুল ‘নুকম্যাপ’ এবং ওয়েবসাইট ‘মিসাইলম্যাপ’ তৈরি করেছেন পারমাণবিক ইতিহাসবিদ অ্যালেক্স ওয়েলারস্টেইন। পূর্ব-পশ্চিম উত্তেজনা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধালে সম্ভাব্য বিপর্যয়ের ফলাফল তার এই টুলে দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ রাশিয়ার অস্ত্রাগারে থাকা একটি পরমাণু অস্ত্র টোপোল (এসএস-২৫) প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ হত্যা করতে সক্ষম এবং এটি লন্ডনে ফেলা হলে আরো ২ দশমিক ২ মিলিয়ন মানুষ আহত হতে পারে। এ ছাড়া ৮০০ কেটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হলে তা পুরো শহরকে শেষ করে দেবে। উত্তরে এনফিল্ড থেকে দক্ষিণে ক্রয়ডন পর্যন্ত তা বিস্তৃত হতে পারে।

পৃথিবীর কোনো দেশই পারমাণবিক যুদ্ধ থেকে নিরাপদ নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে অস্ট্রেলিয়া এবং আর্জেন্টিনা কোনো না কোনোভাবে তাদের দেশের মানুষের জন্য খাবারের জোগান দিতে পারবে। অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা এবং মধ্য আফ্রিকার কিছু অংশে প্রতিরোধী ফসল জন্মানোর ফলে তারা তাদের দেশের কৃষি থেকে খাদ্য সরবরাহ বজায় রাখতে পারবে। তাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে গম উৎপন্ন হয়, যা তাদের সে সময় সাহায্য করবে, পাশাপাশি তাদের জনসংখ্যাও তুলনামূলক কম। এ ক্ষেত্রে তাদের কাছে ভিড় জমাতে পারে এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষুধাপীড়িত মানুষ।

সূত্র : মেট্রো, ইউকে।

LEAVE A REPLY