বেতন না বাড়ায় বিপদে ব্রিটিশরা, ব্যয় মেটাতে হিমশিম

ছবি: ইন্টারনেট

মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পড়ছে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যয় ক্ষমতার সাথে সংগতি রেখে আয় না বাড়ায় তাদের অবস্থা বেশ শোচনীয় হতে চলেচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স (ওএনএস) এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

‘ওএনএস’ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের গড় মূল বেতন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে ৩ শতাংশ কমেছে।

যার জন্য দায়ী মূল্যস্ফীতি। ওএনএসের অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের পরিচালক ড্যারেন মরগান একটি টুইট বার্তায় বলেছেন, বেতনের প্রকৃত মূল্য কমেই চলেছে। বোনাসের পরিমাণ বাদ দিয়ে ২০০১ সালে মন্দা শুরু হওয়ার পর থেকে তুলনা করলে দেখা যায়, যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন এটি সবচেয়ে দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।

ওএনএসের মতে এপ্রিল এবং জুনের মধ্যে বোনাস বাদে মূল বেতন ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।  তবে জিনিসপত্রের দাম এত দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে যে কর্মীরা ব্যয় মেটাতে হিমিশিম খাচ্ছে। আবার মুদ্রাস্ফীতি ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিগত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ডিসেম্বর থেকে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড মোট ছয়বার সুদের হার বাড়ানোর কথা বলেছে। ধারণা করা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য আরো বৃদ্ধি পাবে।

মঙ্গলবার ডাটা ফার্ম কান্তার জানায়, যুক্তরাজ্যে গত চার সপ্তাহে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যস্ফীতির হার হচ্ছে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ, যা বিগত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া গড় শপিং বিল বেড়েছে প্রায় ৫৩৩ পাউন্ড।

এদিকে বিদ্যুৎ বিলও বেড়েছে ব্যাপক হারে। বার্ষিক বিল প্রায় ৫৪ শতাংশ বেড়ে দুই হাজার পাউন্ড ছুঁয়েছে। লক্ষ লক্ষ ব্রিটিশ দৈনন্দিন ব্যয় নিয়ে সংকটে পড়েছে। খাবারের খরচ জোগাবে না খাবার গরম করার খরচ জোগাবে এ নিয়ে দ্বিধায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এর মধ্যেই গবেষণা সংস্থা অক্সিলিওন অনুমান করছে, বার্ষিক বিদ্যুৎ বিল আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলের দিকে পাঁচ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত বাড়তে পারে।

মূল বেতন কমে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর ওপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে। অপরিহার্য অনেক জিনিসের মধ্যে কোনটি বাদ দিয়ে কোনটি রাখবে এমন সিদ্ধান্তে ঘুরপাক খেতে হচ্ছে তাদের। একটি দাতব্য সংস্থা জোসেফ রাউনট্রি ফাউন্ডেশন গত মঙ্গলবার একটি টুইটে এ কথা জানায়।

যুক্তরাজ্যের কর্মীরা এই চাপ সামলানোর জন্য বেতন বৃদ্ধির দাবি করছে। জুন মাসে হাজার হাজার রেল কর্মী তাদের বেতন মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার দাবিতে ধর্মঘট করেছিলেন। এই সপ্তাহে আরো ওয়াকয়াউটে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

অন্যদিকে মঙ্গলবার ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের চেক-ইন কর্মীরা ধর্মঘটে যাওয়ার হুমকি দিলে তাদের গড়ে ১৩ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করা হয়। কর্মীদের ইউনিয়ন ইউনাইট বলেছে, এই বৃদ্ধি মহামারি চলাকালীন কেটে নেওয়া বেতনের সাথে সমন্বয় করতে সাহায্য করবে।

সূত্র : সিএনএন

LEAVE A REPLY