অনুব্রতের চালকল থেকে উদ্ধার দামি ৫ গাড়ি

গ্রাফিক্স: আনন্দবাজারের সৌজন্যে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মন্ডলের চালকলে শুক্রবার অভিযান চালিয়ে পাঁচটি দামি গাড়ি উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তার মধ্যে একটি গাড়ির মালিক প্রবীর মণ্ডল দাবি করেছেন, ঠিকাদারির টেন্ডার পেতে তিনি অনুব্রতকে ৪৬ লাখ রুপির ওই গাড়ি ঘুষ দিয়েছিলেন।

দীর্ঘ টালবাহানার পর বীরভূমের বোলপুরে অবস্থিত ‘ভোলে ব্যোম রাইস মিল’-এ ঢুকতে সক্ষম হন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাবাহিনী সিবিআই কর্মকর্তারা। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, ওই চালকলটি গরু পাচার মামলায় গ্রেপ্তার বীরভূম জেলার তৃণমূল নেতা অনুব্রতের স্ত্রী ও কন্যার নামে।

সেই চালকলে মেলে দামি দামি গাড়ি। তার মধ্যে ছিল একটি ফোর্ড এন্ডেভার। পরিবহন দপ্তরের নথি অনুযায়ী, ওই গাড়ির মালিক প্রবীর। তিনিই শুক্রবার বলেন, ‘ঠিকাদারির টেন্ডার পেতে ৪৬ লাখ টাকার গাড়ি দিয়েছিলাম বিশ্বকর্মা পুজোর সময়। নগদ পাঁচ কোটি টাকাও দেওয়া হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলকে। সেই টেন্ডার তো পেলামই না, উল্টে টাকা আর গাড়়ি ফেরত চাইতে গেলে হুমকি দেওয়া হয়। সর্বক্ষণ গাঁজার কেসের ভয় দেখাত। ’

সিউড়ির বাসিন্দা প্রবীর দীর্ঘদিন ধরে গাড়ির ব্যবসা করেন। ওই ব্যবসায় তাঁর সহযোগী অরূপ ভট্টাচার্য। প্রবীর জানান, মাহিন্দ্রা গাড়ি কম্পানির ডিলারশিপ রয়েছে তাঁদের। গাড়ির ব্যবসার পাশাপাশি কয়েক বছর আগে তাঁরা ময়ূরাক্ষী নদীর ওপর তিলপাড়া বাঁধ সংস্কারের সরকারি টেন্ডারের জন্য আবেদন করেন। প্রবীর ও অরূপের দাবি, ওই টেন্ডার পেতেই অনুব্রতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। অরূপ বলেন, ‘জেলাশাসকের দপ্তরে দরখাস্ত করেছিলাম। সেখান থেকে বলা হয়েছিল, সেচ দপ্তরের অনুমোদন লাগবে। সেই জন্যই অনুব্রত মণ্ডলের কাছে গিয়েছিলাম আমরা। ১০ কোটি টাকার কথা হয়েছিল। তার মধ্যে ৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু গাড়িটা (উদ্ধার হওয়া ফোর্ড এন্ডেভার) জোর করে নেওয়া হয়েছিল। ’

এত ‘চেষ্টা’র পরেও ওই বাঁধ সংস্কারের টেন্ডার না পাওয়া নিয়ে অরূপের ব্যাখ্যা, ‘বিধানসভা ভোটের পরেও দেহরক্ষী সহগলকে ফোন করেছিলাম টেন্ডারের ব্যাপারে। অনুব্রতের বাড়ি গিয়ে টাকা দিয়ে এসেছিলাম। দাদাকে (অনুব্রতকে) দেড় কোটি টাকাও দিয়েছিলাম। ধাপে ধাপে, ছ’সাত বারে। কিন্তু ১০ কোটি টাকা দিতে পারিনি বলে আমাদের টেন্ডার পেতে দেয়নি। বড় ক্ষতি হয়ে গেছে আমাদের। ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ’’

গত ১১ আগস্ট সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হন অনুব্রত। তার আগেই গ্রেপ্তার হয়েছেন সহগল। ফলে অরূপ-প্রবীরের এই অভিযোগ নিয়ে তাঁদের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া সম্ভব হয়নি।  

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

LEAVE A REPLY