রাজশাহীতে ব্যবসায়ীদের পথরোধ করে অস্ত্রের মুখে ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২১ আগস্ট) বিকালে মহানগরীর শাহ মখদুম থানার পোস্টাল একাডেমির সামনে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
এর ৬ ঘণ্টা পর সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় আসামিদের কাছ থেকে ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪০ টাকা ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। সেই সঙ্গে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সটিও জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার (২২ আগস্ট) বিকালে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত কমিশনার মজিদ আলী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার ৬ ডাকাত হলো- রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার পূর্ব মোল্লাপাড়ার রাজ্জাকের ছেলে আশিক ইসলাম (২৪), একই এলাকার আজাদ আলীর ছেলে হৃদয় (২৪), পার্শ্ববর্তী রাজপাড়া থানার আলীগঞ্জ মধ্যপাড়ার আসলাম আলীর ছেলে আব্দুর রহমান (২১), তার ভাই আব্দুর রহিম (২০), ডিঙ্গাডোবা ঘোষ মাহালের লোকমানের ছেলে রিকো ইসলাম (২১) এবং চণ্ডীপুর সুফিয়ানের মোড়ের মৃত এবাদুলের ছেলে ইয়ামিন (২০)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মহানগরীর পবা থানার একলাছ মোল্লাসহ ৮৫ জন পান ব্যবসায়ী একটি সমিতি গঠন করে জেলার দুর্গাপুর উপজেলার দাওকান্দি বাজারে পানের ব্যবসা করেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পান কিনে ঢাকার শ্যামবাজারে বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করেন। রোববার বিকালে দাওকান্দি এলাকার রায়হান আহম্মেদ (২৬), শহিদুল ইসলাম (৩০) এবং আমিনুল ইসলাম (২৭) ঢাকায় পান বিক্রির ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা নিয়ে শিরোইল বাস টার্মিনালে পৌঁছেন। সেখান থেকে তারা একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে দাওকান্দি বাজারের উদ্দেশে রওনা দেন।
মহানগরীর শাহমখদুম থানার পোস্টাল একাডেমির সামনে সিএনজি অটোরিকশাটি পৌঁছালে পেছনে থাকা সেই অ্যাম্বুলেন্সটি হঠাৎ সামনে এসে তাদের গতিরোধ করে। সিএনজি থামার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাম্বুলেন্স হতে ৬-৭ জন ডাকাত বের হয়ে চাইনিজ কুড়াল, হাঁসুয়া, চাকু, ছোরা ও লোহার রড নিয়ে তাদের ঘিরে ধরে। এ সময় রায়হান পালানোর চেষ্টা করেন। ডাকাতরা তাকে ধরে মারধর করে তার কাছে থাকা ১৪ লাখ ২৭ হাজার টাকাসহ অন্যদের কাছে থাকা মোট ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা ডাকাতি করে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আমচত্বরের দিকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে শাহমখদুম থানা পুলিশ আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সসহ আসামিদের শনাক্ত করে। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেফতার করে।
সংবাদ সম্মেলনে ডাকাতির অবশিষ্ট টাকা উদ্ধার ও সহযোগী আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত কমিশনার মজিদ আলী।