টমেটো ফ্লু: ভারতে শতাধিক আক্রান্ত, যেভাবে ছড়ায়

এই রোগে লাল রঙের এক ধরনের ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

ভারতের কেরালা রাজ্যের কল্লাম জেলায় চলতি বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে টমেটো ফ্লুতে আক্রান্ত হিসেবে একজন শনাক্ত হয়। জুলাই মাসের শেষের দিক পর্যন্ত সেখানে ৮২ জন শিশু পাওয়া গেছে, যারা এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

কেরালার পর উড়িষ্যা, তামিলনাড়ু এবং হরিয়ানাতেও অসুখটি শনাক্ত হয়েছে এবং গত বুধবার পর্যন্ত শতাধিক রোগী পাওয়া গেছে; তাদের সিংহভাগই শিশু। আক্রান্ত শিশুদের বয়স এক থেকে ৯ বছর।

টমেটো ফ্লু কী?
নাম টমেটো ফ্লু হলেও এই ফলটির সাথে রোগটির কোনো সম্পর্ক নেই।

এই রোগে ত্বকে টমেটোর মতো লাল রঙের এক ধরনের ফোসকা দেখা দেয়। সেখান থেকেই নামটির উৎপত্তি। ভারতের কেরালার মানুষজন তাদের নিজেদের ভাষায় প্রথম নামটি ব্যবহার করেছে।

এটি নতুন কোনো ভাইরাস নাকি অন্য কোনো ভাইরাসের নতুন ধরন সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।

চিকিৎসা বিষয়ক জার্নাল দ্যা ল্যানসেট লিখেছে- এটি হাত, পা এবং মুখের অসুখের একটি ধরন হতে পারে। করোনা, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার কিছু লক্ষণের সাথে এর মিল রয়েছে।

রোগটি শনাক্ত করার নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই। লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকেরা প্রথমে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা এসব অসুখের পরীক্ষা দিচ্ছেন। সেগুলো না হলে তখন টমেটো ফ্লু বলে এটিকে শনাক্ত করা হচ্ছে।

রোগটির মূল লক্ষণ
ল্যানসেট জানিয়েছে, এই রোগে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর দেখা দেয়, সাথে গলায় ব্যথা, ক্লান্তি ও খাবারে অরুচি হয়।

এর দুই থেকে তিনদিন পর শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে হাত, পা, মুখের ভেতরে, জিহ্বা, দাঁতের মাড়িতে লাল রঙের র‍্যাশের মতো দেখা দেয়।

সেগুলো এক পর্যায়ে বেশ বড় হয়ে ওঠে এবং ফেটে গিয়ে ফুসকুড়ি থেকে তরল পদার্থ ঝরতে থাকে।

হাত এবং পায়ে ফুসকুড়িগুলো বেশি হয়ে থাকে। টমেটো ফ্লু’র র‍্যাশে ব্যথা হয়ে থাকে। ডেঙ্গুর র‍্যাশের সাথে এই পার্থক্যটি রয়েছে।

যেভাবে এটি ছড়ায়
টমেটো ফ্লু একটি ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি সংস্পর্শে এলে, তাদের ব্যবহৃত কোনো বস্তু, পোশাক ধরলে বা ব্যবহার করলে এটি ছড়ায়।

ফুসকুড়িগুলো ফেটে গেলে রোগটি বেশি ছোঁয়াচে হয়ে ওঠে।

চিকিৎসায় যা করা হচ্ছে
টমেটো ফ্লুর চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। তবে রোগটি নিজে থেকেই সেরে যায়। শারীরিক কষ্ট অবশ্য রয়েছে, কিন্তু রোগটি প্রাণঘাতী নয়। শিশুদের এই রোগটি বেশি কষ্ট দেয়।

এছাড়া প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং প্রবীণদেরও এই রোগটি হতে পারে।

যে লক্ষণ বেশি দেখা যাচ্ছে সেটি প্রশমনে ওষুধ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। জ্বর ও ব্যথায় প্যারাসিটামল বা কোনো অ্যান্টিবায়োটিক, ফুসকুড়ির জন্য মলম দেয়া হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি।

LEAVE A REPLY