হিন্দু পরিবারের চরম দুর্দিনে পাশে দাঁড়াল মুসলিম প্রতিবেশি

প্রতীকী ছবি

তিন সন্তান মানসিক প্রতিবন্ধী। তাদের চিকিৎসার খরচ অনেক। তার পরেও বাবা মায়ের মন খরচের কথা ভুলে চিকিৎসার অর্থ জোগাড় করে চলেছে। আর এসব করতে গিয়ে ফুরিয়ে গেছে সব সঞ্চয়।

একপর্যায়ে বিক্রি করতে হয়েছে থাকার বাড়িটাও। প্রতিবেশীর এমন অসহায় সময়ে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এক ব্যক্তি। মাথা গোঁজার ঠাঁই জুগিয়েছেন।  

অথচ দুজন আলাদা ধর্মের মানুষ। তবে সেই পরিচয় আদৌ বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি তাদের পাশাপাশি থাকায়। সম্প্রতি এমনই সম্প্রীতির নজির গড়লেন ভারতের রাজস্থানের এক ব্যক্তি।

জানা গেছে, রাজস্থানের চুরু শহরের বাসিন্দা সানওয়ারমাল শর্মা। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলের কেউই প্রাপ্তবয়স্ক নয়। উপরন্তু প্রত্যেকেই মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। সে কারণে তিনজনেই বাবা-মায়ের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল।  

দিনরাত পরিশ্রম করেও তিন সন্তানের চিকিৎসার বিপুল ব্যয়ভার বহন করা দিন দিন কঠিন হয়ে উঠেছিল তার পক্ষে। বাধ্য হয়ে নিজেদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন শর্মা দম্পতি। একে একে বিক্রি করে দিতে হয় পৈতৃক বাড়িসহ জমি জায়গা সব কিছুই। সহায়সম্বলহীন হয়ে কার্যত রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হয় পরিবারটিকে।

ওই পরিবারটির এমন সহায়সম্বলহীন অবস্থা নজরে পড়েছিল স্থানীয় এক জন মুসলিমের। শর্মা দম্পতির অসহায় অবস্থার কথা শুনে অবিলম্বে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ইসহাক খান নামের ওই ব্যক্তি। জাতি ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে শর্মা দম্পতি ও তাদের সন্তানদের নিজের বাড়িতে নিয়ে যান তিনি।  

তারপর সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে জোগাড় করেন প্রায় ৮০ হাজার টাকা। যত্ন সহকারে সেই টাকা ওই হিন্দু পরিবারটির হাতে তুলে দেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, ইসহাক খানের ছেলে লতিফ নিজের ভাগের জমি থেকে খানিকটা দান করেন শর্মা পরিবারকে। স্থানীয়দের উদ্যোগে সেই জমিতে একটি ঘরও বানিয়ে দেওয়া হয় বিনামূল্যেই।

অনেকেই বলছেন, ধর্মের ভিত্তিতে যখন মাঝে মাঝেই উসকে ওঠে অসহিষ্ণুতা, সেই সময়ে এমন ঘটনা সত্যিই নজিরবিহীন। জাতি ধর্ম বর্ণের সব ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে উঠে মানবিকতাই যে একমাত্র সত্য, সে কথাই যেন ফের প্রমাণ করে দিল রাজস্থানের এই ঘটনা।
সূত্র: এমএসএন ডটকম

LEAVE A REPLY