ভারত-পাকিস্তান বারুদে ঠাসা দ্বৈরথ দুবাইয়ে

শ্রীলংকা-আফগানিস্তান ম্যাচ দিয়ে শনিবার পর্দা উঠেছে এশিয়া কাপের ১৫তম আসরের। তবে এ দুদলের সমর্থকদের বাইরে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচ নিয়ে আগ্রহ ছিল না কারও। থাকার কথাও নয়। একই গ্রুপে থাকায় বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা অবশ্য মন দিয়েই দেখেছেন ম্যাচটি। মরুর রাজ্যে উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে এশিয়া কাপের আসল রোমাঞ্চ শুরু হচ্ছে আজ। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় দুবাইয়ে মুখোমুখি হবে পরস্পরের প্রতি বৈরী মনোভাপন্ন দুই পড়শি ভারত ও পাকিস্তান। জিভে জল আনা এই বিস্ফোরক দ্বৈরথ দিয়ে শুরু হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর এশিয়া কাপ অভিযান। রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘদিন দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হয় না ওয়াঘা সীমান্তের দুই পারের দেশ। আইসিসির টুর্নামেন্টের বাইরে শুধু এশিয়া কাপেই দেখা হয় ভারত ও পাকিস্তানের। এবারের আসরে তিনটি ‘এল ক্লাসিকোর’ সম্ভাবনায় আরও বেশি রোমাঞ্চিত ক্রিকেটপ্রেমীরা। একই ভেন্যুতে গত বছর টি ৩০ বিশ্বকাপে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ঐতিহাসিক এক গেরো খুলেছিল পাকিস্তান। সংস্করণ অভিন্ন হওয়ায় এশিয়া কাপে তার বদলা নিতে মুখিয়ে আছে রোহিত শর্মার ভারত।

দুদলই রয়েছে দারুণ ছন্দে। তবে ফর্ম বাস্তবতা যেমনই হোক, ভারত-পাকিস্তান মহারণ নিয়ে আগে থেকে কিছু অনুমান করা কঠিন। টি ২০তে ভারতের বিপক্ষে নয় ম্যাচে পাকিস্তানের জয় মাত্র দুটি। ওয়ানডে ও টি ২০ মিলিয়ে এশিয়া কাপে এর আগে মোট ১৪ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। ভারত জিতেছে আটবার, পাকিস্তান পাঁচবার। বাকি ম্যাচটির ফল হয়নি। তবে মাঠের লড়াই শুরু হলে এসব পরিসংখ্যান অর্থহীন হয়ে যায়। সবশেষ দেখায় গতির ঝড়ে ভারতকে গুঁড়িয়ে দেওয়া পাকিস্তানের পেস আক্রমণের সেনাপতি শাহিন শাহ আফ্রিদি এবার চোটের থাবায় দর্শক হয়ে গেছেন। শেষ মুহূর্তে ছিটকে গেছেন আরেক পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিমও। তাদের জায়গায় দলে এসেছেন মোহাম্মদ হাসনাইন ও হাসান আলী। একইভাবে ভারতও পাচ্ছে না তাদের বোলিং আক্রমণের মূল অস্ত্র জাসপ্রিত বুমরাকে। প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড় করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় এশিয়া কাপে ভারতের ভারপ্রাপ্ত কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন ভিভিএস লক্ষণ।

পাকিস্তানের ব্যাটিং অধিনায়ক বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। মিডল অর্ডারে অভিজ্ঞ কোনো ব্যাটার নেই। এখানেই এগিয়ে ভারত। অধিনায়ক রোহিত ও বিরট কোহলি ছাড়াও লোকেশ রাহুল, সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পন্ত ও দিনেশ কার্তিকের মতো দারুণ সব ব্যাটার আছে ভারতের। আছে হার্দিক পান্ডিয়া ও রবীন্দ্র জাদেজার মতো অলরাউন্ডার। তবে স্বপ্নের ফর্মে থাকা বাবর একাই সব সমীকরণ পালটে দিতে পারেন। ছন্দে ফিরতে মরিয়া কোহলিকে নিয়েও একই প্রত্যাশা ভারতীয় সমর্থকদের। পাকিস্তানের বিপক্ষে আজ নিজের শততম টি ২০তে কোহলি স্বরূপে ফিরলে ভারতকে থামানো কঠিন হবে।

মজার ব্যাপার হলো-মহারণের আগে কোহলির পাশে দাঁড়ালেন পাকিস্তানের সহ-অধিনায়ক শাদাব খান, ‘আমি দোয়া করব, কোহলি যেন স্বরূপে ফিরতে পারেন। আমি চাই, তিনি সেঞ্চুরি করুন, তবে সেটি যেন আমাদের বিপক্ষে না হয়।’ এরপরই শাদাবের হুংকার, ‘ভালো দল থেকে চ্যাম্পিয়ন দল হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এখানে এসেছি আমরা। এবার শিরোপা চাই আমাদের। গত টি ২০ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে সেই জয় এখন ইতিহাস। কিন্তু এটা আমাদের বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেবে।’

ভারতের সহ-অধিনায়ক লোকেশ রাহুল আবার উত্তেজনায় ফুটছেন, ‘আমরা সবাই খুব রোমাঞ্চিত। এ ধরনের বড় টুর্নামেন্ট ছাড়া পরস্পরের বিপক্ষে খেলার সুযোগ হয় না আমাদের। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের উত্তাপ থেকে তাই দূরে থাকা সম্ভব নয়। নিজেদের চ্যালেঞ্জ জানানোর দারুণ এক সুযোগ এটি।’ (আরও লেখা খেলার পাতায়)

LEAVE A REPLY