জাহালমকে পাঁচ লাখ টাকা দিল ব্র্যাক ব্যাংক

আসামি না হয়েও ঋণ জালিয়াতির মামলায় তিনবছর জেল খাটার ঘটনায় পাটকলকর্মী জাহালমকে ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ লাখ টাকা পেয়েছেন জাহালম। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জাহালমের হাতে পাঁচ লাখ টাকার চেক তেুলে দেওয়া হয়।

আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে ব্র্যাক ব্যাংকের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানের চেম্বারে জাহালমের কাছে চেক হস্তান্তর করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

কালের কণ্ঠকে এ আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘জাহালমের জাতীয় পরিচয় পত্রের অনুলিপি রেখে তার হাতে ব্র্যাক ব্যাংকের পাঁচ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। ‘

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। রুলও জারি করা হয়।

পরে একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজির হলে হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং দুদকের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা চান। আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা করে ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়। পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফ আই আর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেন আদালত। পরে ২০২০ সালের ১৭ এপ্রিল হাইকোর্ট আরেক আদেশ দেন। জাহালম কাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য দুদকের কাছে ফের প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট। এ আদেশে দুদক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক আদালতে প্রতিবেদন দেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রুলের ওপর শুনানি শেষ হলে ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায়ে ব্র্যাক ব্যাংককে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন। টাকা পরিশোধ করে এক সপ্তাহ পর রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে, ‘এ ঘটনায় জাহালমের কোনো দোষ ছিল না। তবু তার জীবনের তিনটি বছর জেলে কাটাতে হয়েছে। এর ফলে তাকে তার পেশা হারাতে হয়েছে। এতে জাহালমের ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবি রাখেন। তিনি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী। ‘

LEAVE A REPLY