স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং সংবিধিবদ্ধ সংস্থাগুলোর উদ্বৃত্ত তহবিল বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার আইনি বিধানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট।
আদালত জানতে চেয়েছেন- স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানশিয়াল কর্পোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান আইন, ২০২০ এর ৩(২) ও ৫ ধারা সংবাধানের নামে কেন সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না। চার সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
আইনটির ৩ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রুল দেন।
জনস্বার্থে রিটটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তায়েব-উল-ইসলাম শৌরভ।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন, আইনজীবী শাহদীন মালিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
রিটকারী পক্ষের আইনজীবী শুনানিতে বলেন, আইনটির এ দুটি ধারা সংবিধানের ৭ ও ৪২ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।
আইনের ৩(২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, তফসিলভুক্ত সংস্থাসমূহের তহবিলে রক্ষিত উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের ক্ষেত্রে আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন বা আইনের বিধান যদি এই আইনের বিধানের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তাহলে সেই আইন বা আইনের বিধান যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি অকার্যকর বলিয়া গণ্য হইবে। অন্য কোনো আইনের বিধি যা এই আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তা সংক্রামক বলে গণ্য হবে। ‘ আর আইনটি ৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যা কিছুই থাকুক না কেন, তফসিলভুক্ত কোনো সংস্থা কর্তৃক-
(ক) এই আইন প্রবর্তনের পর ধারা ৪ এ উল্লিখিত অর্থের অতিরিক্ত অর্থ অবিলম্বে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করিতে হইবে; এবং
(খ) প্রতি অর্থবছর সমাপ্ত হইবার তিন মাসের মধ্যে ওই অর্থবছরের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করিতে হইবে। ‘
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো তাদের উদ্বৃত্ত তহবিলের ১৬ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে। আর গত বছর জমা দিয়েছে, ১৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা।