বসনিয়ার যুদ্ধাপরাধী রাতকো ম্লাদিচ গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে

যুদ্ধপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত এবং সাবেক বসনিয়ান সার্ব মিলিটারি প্রধান রাতকো ম্লাদিচকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বসনিয়ার কসাই নামে পরিচিত রাতকো ম্লাদিচের স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে পরিবার থেকে জানানো হয়েছে।

আলজাজিরা জানিয়েছে, যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত এই যুদ্ধাপরাধীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তার ছেলে ডার্কো ম্লাদিচ। সপ্তাহখানেক ধরে তার বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলেও এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন তিনি।

রাতকো ম্লাদিচের ছেলে ডার্কো ম্লাদিচ জানান, শারীরিক দুর্বলতা, ফুসফুস ও হার্টের সমস্যার কারণে তাকে কারাগারের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এসবের ফল স্থানীয় সময় সোমবার জানা যাবে।

রাতকো ম্লাদিচের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আগস্টের শুরুতে তার করোনা ধরা পড়েছিল। কিন্তু কারাগারের চিকিৎসা ছিল খুবই ধীর ও অপর্যাপ্ত।

ডাচ শান্তিরক্ষী সৈন্যদের উপস্থিতি সত্ত্বেও ১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে বসনিয়ান সার্ব বাহিনী পূর্বাঞ্চলীয় শহর স্রেব্রেনিকায় আক্রমণ করে আট হাজারেরও বেশি বসনিয়ান পুরুষকে হত্যা করে। এই গণহত্যাসহ বসনিয়ায় ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সালের যুদ্ধে ঘটা সবগুলো গণহত্যার মূল হোতা ছিলেন রাতকো ম্লাদিচ। যুদ্ধ শেষে পালিয়ে যান তিনি। ২০১১ সালের মে মাসে সার্বিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২০১৭ সালে জাতিসংঘের যুদ্ধাপরাধবিষয়ক একটি ট্রাইব্যুনাল বসনিয়ায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে রাতকো ম্লাদিচকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। রায়ে বলা হয়, নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে অ-সার্বদের নির্মূল করার প্রয়াসে রাজধানী সারাজেভো এবং বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার অন্যান্য অংশে বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য রাতকো ম্লাদিচকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হলো।

তবে রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আপিল করেন ম্লাদিচের আইনজীবীরা। তারা বলেন, রাতকো ম্লাদিচের অধীনে কর্মরত সার্ব সেনাদের অপরাধের দায় সাবেক এই জেনারেলের ওপর বর্তায় না। নতুন করে বিচার শুরুর আবেদন জানিয়ে তারা বলেন, ন্যায়বিচার পেলে রাতকো ম্লাদিচ অবশ্যই বেকসুর খালাস পাবেন।

পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালের জুনে জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল রেসিডুয়্যাল মেকানিজম ফর ক্রিমিনাল ট্রাইব্যুনালেও রাতকো ম্লাদিচের আগের সাজা বহাল রাখা হয়। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত ট্রাইব্যুনালের পাঁচ বিচারক এই রায় দেন। এরপর আর এই রায়ে আপিল করার সুযোগ নেই। এর ফলে তাকে আজীবন কারাগারেই কাটাতে হবে।
সূত্র: আলজাজিরা।

LEAVE A REPLY