প্রথম দফা শ্রদ্ধা জানাতে রানির কফিন এডিনবরার ক্যাথেড্রালে

শ্রদ্ধা জানাতে রানির কফিন সোমবার এডিনবরার সেন্ট জাইল’স ক্যাথেড্রালে নেওয়া হয়-ছবি: এএফপি

স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরার হলিরুডহাউস থেকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কফিন সেন্ট জাইলস ক্যাথেড্রালে নেওয়া হয় সোমবার। সেখানেই প্রথমবার রানির কফিনের সামনে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পেয়েছে শোকার্ত সর্বস্তরের স্কটিশরা।

শেষবারের মতো লন্ডনে ফিরে যাওয়ার আগে রানির মরদেহ প্রিয় স্কটল্যান্ডের মাটিতে আরো কিছু সময় অতিবাহিত করাকে ‘যথাযোগ্য’ বলেই আখ্যা দিয়েছেন রাজপরিবারের বিষয়ে অভিজ্ঞ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা।

শববাহীসহ কয়েকটি গাড়ির মিছিল ধীরগতিতে হলিরুডহাউস থেকে ক্যাথেড্রালে যায়।

ভাবগম্ভীর এ শোভাযাত্রায় অংশ নিতে লন্ডন থেকে এডিনবরা যান রাজা তৃতীয় চার্লস ও স্ত্রী কুইন কনসর্ট ক্যামিলা। প্রথমে এক অনুষ্ঠানে এডিনবরা শহরের প্রতীকী চাবি হস্তান্তর করা হয় নতুন রাজার হাতে। পরে রাজপরিবারের সদস্যরা কফিনের পেছন পেছন ক্যাথেড্রালে যান। হাজার হাজার শোকাহত মানুষ পথের দুই পাশে দাঁড়িয়ে ছিল এ সময়। এই ভাবগম্ভীর শোকসন্তপ্ত পরিবেশে ‘শান্তিভঙ্গের অভিযোগে’ পুলিশ এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গেছে।

রানির জীবন এবং স্কটল্যান্ডের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা আলোচনা হয় সেন্ট জাইল’স ক্যাথেড্রালে। যাজক রানির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তব্য দেন। স্কটল্যান্ডের প্রতি রানির ভালোবাসার কথা উঠে আসে তার বক্তব্যে। এরপর হয় সমবেত প্রার্থনা। রানির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। প্রার্থনা পর্ব শেষ হয় জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে।

সেন্ট জাইলসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজা ও রাজপরিবারের সদস্যরা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। প্রার্থনার সময় ‘লড মাই শেফার্ড’ স্ত্রোত্রটি গাওয়া হয়। এটি ছিল রানির এক প্রিয় স্ত্রোত্র। স্কটিশ গ্রাম ক্র্যাথির ছোট গির্জায় এ ধর্মীয় সঙ্গীত গাইতেন রানি। কাছের বালমোরাল ক্যাসেলে থাকার সময় ওই গির্জাতেই যেত রাজপরিবার।

রানির কফিন ২৪ ঘণ্টা এডিনবরার এই ক্যাথেড্রালে রাখার পর মঙ্গলবার তা ইংল্যান্ডের লন্ডনে বাকিংহাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হবে। বাকিংহাম প্যালেস থেকে কফিন বুধবার ওয়েস্টমিনস্টার হলে নেওয়া হবে। সেখানে টানা চার দিন রানির কফিনের পাশ দিয়ে হেঁটে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবে সর্বসাধারণ।

গতকাল এডিনবরা যাওয়ার আগে প্রথমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভাষণ দেন রাজা তৃতীয় চার্লস। ওয়েস্টমিনস্টার হলে আইন প্রণেতাদের সামনে নতুন রাজা তাঁর ‘প্রিয়তমা মায়ের’ রেখে যাওয়া ‘নিঃস্বার্থ কর্তব্যের উদাহরণ’ অনুসরণ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। পার্লামেন্টে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রস্তাব তোলা হয়।

২০২০ সালে রাজকীয় দায়িত্ব ত্যাগ করা চার্লসের ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারিও গতকাল দাদির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। রানির মৃত্যুর পর জনসমক্ষে দেওয়া প্রথম বক্তব্যে হ্যারি বলেন, ‘তাঁকে গভীরভাবে অনুভব করছি। ’ আচরণ নিয়ে রাজপরিবারের প্রতি নানা অভিযোগ ছিল হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেলের। সেই মার্কেলও ‘নতুন ভূমিকায় চার্লসকে সম্মান জানিয়েছেন’ বলে উল্লেখ করেন ডিউক অব সাসেক্স হ্যারি। সূত্র : বিবিসি ও এএফপি

LEAVE A REPLY