স্ত্রী-সন্তান আর বৃদ্ধা মাসহ পাঁচ সদস্যের পরিবার জগদীশের (৩২)। অভাবের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। জীবিকার তাগিদে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চলত। শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন নিয়েও ছিল নানা পরিকল্পনা। কিন্তু সব স্বপ্নই ভেসে গেল করতোয়ার স্রোতের টানে।
গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া আউলিয়া ঘাটে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয়েছে জগদীশের। মহালয়া উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মসভায় যোগ দিতে অন্যদের মত জগদীশও যাচ্ছিলেন বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে।
জগদীশের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের বটতলী এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মৃত প্রবিন্দ্র নাথের ছেলে। বটতলির এই জগদীশ ছিলেন তার পরিবারের প্রধান কর্তা।
স্বামীকে হারিয়েছেন ফুলমতি রায় (৩৩)। এখন তিনি ছেলে কৌশিক রায় (৭) ও ১৯ মাস বয়সী মেয়ে রাধিকা রানীকে নিয়ে দিশেহারা। ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক জগদীশের মা ষাটোর্ধ্ব ননী বালা।
ননী বালা বলেন, মা হয়ে ছেলেকে চিতায় পাঠানোর কষ্ট কীভাবে সহ্য করব। আমাদের এখন কে আগলে রাখবে। খুব কষ্ট করে ছেলেটাকে বড় করছি। তার এমন মৃত্যু আমাকে বেঁচে থাকা আর মরে যাওয়া দুই-ই সমান।
জগদীশের স্ত্রী ফুলমতি রানী বিলাপ করে বলেন, মন্দিরে আমিও যেতে চাইছিলাম, আমাকে না নিয়ে একাই গেল। আর ফিরে এলো লাশ হয়ে। আমি এই ছোট ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে কীভাবে বাঁচব।