দনিয়া রাদের ভাইরাল হওয়া হিজাব ছাড়া ছবি। (ছবি : টুইটার)
পুলিশি হেফাজতে মারা যাওয়া মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদের সময় হিজাব ছাড়া ছবি ভাইরাল হওয়া এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে ইরানের পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিতে তাকে এক বন্ধুর সঙ্গে রেস্তোরাঁয় বসে খেতে দেখা গেছে। গ্রেপ্তার হওয়া নারীর বোন শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন। খবর আল অ্যারাবিয়ার।
ছবিটিতে দেখা যায়, দনিয়া রাদ তার এক নারী বন্ধুর সাথে তেহরানের একটি ঐতিহ্যবাহী রেস্তোরাঁয় বসে খাচ্ছেন। এ সময় তাদের কারো মাথায়ই হিজাব ছিল না।
ইরানের আইনে হিজাব পড়ার বিষয়ে কড়া বিধান রয়েছে।
ছবিটি নেটিজেনরা ব্যাপকভাবে শেয়ার করেছে। তাদের অনেকে কঠোর পোষাক নীতির আইন অমান্য করায় ওই দুই নারীকে সাধুবাদও জানিয়েছে।
দনিয়ার বোন দিনা টুইটারে লিখেছেন, ‘গতকাল ছবিটি প্রকাশের পর নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আমার বোন দনিয়া রাদের সাথে যোগাযোগ করে ঘটনার বিষয়ে কৈফিয়ত চায়। ‘
দিনা বলেছেন ‘আজ দনিয়াকে একটি জায়গায় যেতে বলে হয় এবং সেখানে যাওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কয়েক ঘণ্টা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর দনিয়া আমাকে খুব অল্প সময়ের ফোন কলে জানায় তাকে এভিন কারাগারের ২০৯ নম্বর ওয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। ‘
দিনা উল্লেখ করেছেন এটি ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় পরিচালিত তেহরান জেলের একটি কুখ্যাত শাখা। তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমাদের পরিবার তার সুস্থতা নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। ‘
যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক ওমিদ মেমারিয়ান টুইটারে মন্তব্য করেছেন, ‘তারা শুধু হিজাব ছাড়া নাস্তা করতে গিয়েছিল। তাই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ইরানের হিজাব নীতি নৃশংস এবং অসুস্থ। ‘
গত ১৩ সেপ্টেম্বর হিজাব না পরার দায়ে মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে ইরানের পুলিশ। তার তিনদিন পর পুলিশি হেফাজতে হাসপাতালে ২২ বছর বয়সী এই তরুণীর মৃত্যু হয়। তার পর থেকে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
সহিংসতায় শুক্রবার পর্যন্ত অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস। ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা এবং ইরানি কর্তৃপক্ষের এমন ভয়াবহ দমন নিপীড়ন সত্ত্বেও থামছে না বিক্ষোভ।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্ষোভে সমর্থন জানানোর অভিযোগে ইরানের প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলোয়াড় হোসেইন মানাহিকে শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র : আল অ্যারাবিয়া।