আ.লীগের কেন্দ্রীয় নেতার ওপর হামলা

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীমের ওপর হামলা করেছে ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা কর্মীরা।

সোমবার রাত ৯টায় ডামুড্যা উপজেলা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডামুড্যা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর মাঝি।

হামলার সময় ডামুড্যা উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয় ও ৩টি গাড়ি ভাংচুরের পাশাপাশি ২৫ জন নেতা-কর্মীকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে ডামুড্যা থানা পুলিশ আহদতের উদ্ধার করে। 

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরির্শন করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা বলছেন, গোসাইরহাট পূজা মন্ডপ পরিদর্শন শেষে ডামুড্যা উপজেলায় আসার পর উপজেলা কার্যালয়ে বসি। সেখানে শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের সমর্থকরা হামলা করেছে।

ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাষ্টার কামাল উদ্দিন ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম ২৫/৩০ জন নেতা-কর্মী নিয়ে গোসাইরহাট পূজামন্ডপ পরিদর্শনে যান। সন্ধ্যায় ডামুড্যা উপজেলাকার্যালয়ে যান তিনি। সেখানে গোসাইরহাট ও ডামুড্যার নেতা কর্মীদের নিয়ে খাওয়া দাওয়া শেষে আলোচনা করছিলেন। এ সময় কিছু নেতা কর্মী উপজেলা কার্যালয় থেকে নিচে নামতে ছিল। এ সময় ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গভেষনা বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবরের নেতৃতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ডামুড্য উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ডুকে কার্যালয়ে চেয়ার টেবিলসহ ব্যাপক ভাংচুর চালায়। 

এরপর সেখানে থাকা নেতা কর্মীদের উপর হামলা করে। এ সময় নিচে থাকা ৩টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এ সময় কামাল মাষ্টার, সজল সিকদার, অপু বেপারী, মিন্টু পাল, এনামুল হক লিয়ন, রিপন সৈয়াল, রনজিৎ শিকারী, সজিব শিকারী, দিল মোহাম্মদ, আসলাম বেপারী, সজিব দাস ও অসীম দাসসহ ২৫ জন নেতা কর্মী মারাত্মক আহত হন। 
 
শরীয়তপুর জেলা শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি সজল সিকদার বলেন, আমরা সারাদিন বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন শেষে ডামুড্যা উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মাঝির আমন্ত্রণ রাতের খাবার খেতে আসি। এ সময় জুলহাস-মাদবরসহ ২০ থেকে ৩০ জন আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা ২৫ জন আহত হই।

ডামুড্যা উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর মাঝি বলেন, গোসাইরহাট উপজেলা থেকে পূজামন্ডপ পরিদর্শন শেষে রাতে আমার অফিসে নেতাকর্মীসহ নৈশভোজ করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম। ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা জুলহাস মাদবর, কাজল মাদবর, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু মাদবর, জয় মাদবর, ডামুড্যা সরকারি আব্দুর রাজ্জাক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন মিঠুসহ ২০-৩০ জন হামলা করে। তারা শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের অনুসারী।

আহত মিন্টু পাল বলেন, হামলায় শরীয়তপুর জেলা শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি সজল সিকদারসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় হামলাকারীরা ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয় ভাঙচুর করে। কার্যালয়ের নিচে থাকা ৩টি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে জানালে পুলিশ প্রহরায় ভেদরগঞ্জের কার্তিকপুরের বাড়ি ফেরেন আউয়াল শামীম।

ডামুড্যা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রুবেল মাদবর বলেন, আমরা এ হামলার সাথে জড়িত না আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।

ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গভেষণা বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবর বলেন, তারা আমাদের একটি (হায়েক্স) গাড়ি ভাংচুর করেছে। এগুলো সব মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা কোন হামলা করিনি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম বলেন, আমাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তারা নাহিম রাজ্জাকের শ্লোগান দিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। অপরদিকে, শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাককে একাধিকবার ফোন দিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফ আহমেদ বলেন, বিষয়টি শোনার পর দ্রুত সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনি। সেখানে কিছু চেয়ার আর গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করা হয়েছে। কেউ কোনও অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY