জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের সূত্রপাত ঘটে নরসিংদীর ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে। সেখানে দুটি গ্রিড সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ সমন্বয় করার সময় এই বিপর্যয় ঘটে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র। যদিও পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) কেউ গত রাত ১০টা পর্যন্ত বিপর্যয়ের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
এই বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে পিজিসিবি নির্বাহী পরিচালককে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ছাড়া আরো তদন্ত কমিটি করার নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের একটি এবং তৃতীয় পক্ষের একটি কমিটি বিদ্যুবিভ্রাটের কারণ খুঁজে বের করতে কাজ করবে।
পিজিসিবির জনসংযোগ ব্যবস্থাপক এ বি এম বদরুদ্দোজা সুমন কালের কণ্ঠকে বলেন, নানা কারণে এই বিপর্যয় ঘটে থাকতে পারে। জাতীয় গ্রিডে সমস্যা হলে তা চালু করার বিষয়টি জটিল ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। বিপর্যয়ের কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত রাতেই পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক মো. ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদ্যুৎব্যবস্থায় গ্রিড একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে সারা দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হয়। কোনো কারণে এই গ্রিড বন্ধ বা ব্যাহত হলে বিপর্যয় ঘটে। নানা কারণে এই বিপর্যয় ঘটতে পারে। অতি পুরনো ও জরাজীর্ণ সঞ্চালন লাইনে (গ্রিড) যদি তার ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হয়, তাহলে গ্রিডের সার্কিট পুড়ে বিপর্যয় ঘটতে পারে। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ফ্রিকোয়েন্সিতে হেরফের হলে গ্রিড বন্ধ হতে পারে।
বিশ্লেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো দেশের জাতীয় গ্রিডের একটি প্রধান অংশ (ব্যাকবোন) থাকে। তার সঙ্গে যুক্ত থাকে একাধিক আঞ্চলিক গ্রিড। সে বিভক্তিগুলো আবার এক সুতায় গাঁথা থাকে। এর মধ্যে এমন কারিগরি ব্যবস্থা রয়েছে, যাতে জাতীয় গ্রিডের কোনো আঞ্চলিক অংশে ওই যেকোনো কারণে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে বা বন্ধ হয়ে গেলে সম্পূর্ণ গ্রিড বন্ধ হবে না। তবে ব্যাকবোন বন্ধ হওয়ার কোনো কারণ ঘটলে তার প্রভাব সর্বব্যাপী হয়।