ছাউনি নেই, নষ্ট হচ্ছে সরঞ্জাম

ওপরে ছাউনি নেই। তার মধ্যে বসানো হয়েছে মনিটর, সিসিটিভি, মাইক ও টিউবলাইট। রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে এসব। ছবি : লুত্ফর রহমানঅ-অ+

রাজধানীর বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফরমের কিছু অংশে ছাউনি নেই। এতে সেখানে রাখা রেলওয়ের মূল্যবান সরঞ্জাম রোদ ও বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা।

দীর্ঘদিন ধরে রেলস্টেশনটিতে কুলির কাজ করছেন রবিন আহমেদ।

তিন-চার মাস ধরে কাজ করতে দেখছেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ থেকে সাত দিন পর পর দেখি কিছু কাজ হয়। আবার কই যেন হারিয়ে যায়। ’

তবে বছরখানেক ধরে কাজ চলার কথা জানান আরেক কুলি সুনারু। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘এই কাজ তো বছরখানেক ধরে চলছে। আর ছাউনি ফাঁকা তো বহুদিন ধরে। মাঝখান দিয়ে কিছু টিন বসাতে এবং রং করতে দেখছি। এরপর আর কোনো কাজ করতে দেখিনি। ’

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিমানবন্দর থেকে উত্তরামুখী প্ল্যাটফরমের মাঝখানের অংশে কোনো ছাউনি নেই। এর পরের অংশে ছাউনি থাকলেও সেগুলো সব ভাঙা টিন দিয়ে করা হয়েছে। দেখে বোঝা যায়, এগুলোর মধ্যে কোনো জোড়া দেওয়া হয়নি। শুধু ওপর দিয়ে টিনগুলো রেখে দেওয়া হয়েছে। প্ল্যাটফরমের ওই অংশে তিনটি টিভি মনিটর, চারটি সিসিটিভি, দুটি মাইক এবং ১০টি টিউবলাইট রয়েছে। তবে কোনো ফ্যান নেই। সরঞ্জামগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে, রোদে ও বৃষ্টিতে ভিজে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া এসব সরঞ্জামের তারগুলো ঝুলে থাকতে দেখা গেছে।

শুধু সরঞ্জাম নয়, রোদ-বৃষ্টিতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা। প্রায়ই এই স্টেশন থেকে রাজশাহী যান রিফাত হোসেন। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি হলে এখানে দাঁড়ানোর উপায় থাকে না। তখন চাপাচাপি করে দাঁড়াতে হয়। প্ল্যাটফরমও পিচ্ছিল হয়ে যায়, যার কারণে ওই দিক দিয়ে দৌড়ে ট্রেনে ওঠা যায় না। ’

এসব কাজের ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন বিমানবন্দর রেলস্টেশনের মাস্টার মো. হালিমুজ্জামান। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘এসব কাজ করতে রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। তারাই কাজগুলো করে। কাজ আস্তে-ধীরে হচ্ছে। তবে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কেন শেষ হচ্ছে না, তারাই ভালো বলতে পারবে। ’

এই কাজের ব্যাপারে জানতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব) মো. আবু জাফর মিঞাকে একাধিকবার ফোন ও এসএমএস দিলেও তিনি কোনো তথ্য দেননি।

গত মঙ্গলবার দুপুরে একজন ব্যক্তি এই প্রতিবেদককে ফোন দিয়ে জানান যে তিনি এই কাজের ঠিকাদার। তাঁর নাম আব্দুর রউফ। একাধিকবার তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম জানতে চাইলেও তিনি জানাননি। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যে টিন লাগাব তা বাজারে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ কারণে কাজ করতে পারিনি। এখন টিন বাজারে আসছে। দু-এক দিনের মধ্যে কাজ ধরব। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। তিন ভাগের দুই ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। ’

এই কাজে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে আব্দুর রউফ বলেন, ‘একদিকে বাজেট নেই। বাজেট কবে পাব তা-ও জানি না। এখনো একটি বিলও তুলতে পারিনি। ’

LEAVE A REPLY