জ্ঞানবাপী মসজিদ: শিবলিঙ্গের বয়স পরীক্ষার আবেদন খারিজ

ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে প্রাপ্ত কথিত ‘শিবলিঙ্গের’ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যের বারাণসী জেলা আদালত। গতকাল শুক্রবার আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক অজয়কুমার বিশ্বেস এই আদেশ দেন।

জ্ঞানবাপী মসজিদের ওজুখানায় শিবলিঙ্গের উপস্থিতি দাবি করে এর বয়স জানতে ‘কার্বন ডেটিং’ পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছিল। বিচারক অজয়কুমার বিশ্বেস তা খারিজ করে দিয়ে বলেন, ‘শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব খোঁজার জন্য জ্ঞানবাপী চত্বরে কোনো বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের কাজ করা যাবে না।

এর আগে জেলা আদালতে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার আবেদনের বিরোধিতা করেছিল জ্ঞানবাপী মসজিদ পরিচালনায় যুক্ত ‘আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি’। গতকাল সেই আবেদনই গ্রহণ করেছেন আদালত।

গত বছরের আগস্টে পাঁচ হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী জ্ঞানবাপীর ওজুখানা এবং মসজিদের ভেতরে পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করেন। তাদের বক্তব্য, এটি সেখানে একসময় মন্দির থাকার প্রমাণ। ওই নারীরা সেখানে পূজা-অর্চনার অনুমতি চেয়ে আদালতে মামলা করেন।

এই মামলার ধারাবাহিকতায় মসজিদের অভ্যন্তরের ভিডিও সমীক্ষার নির্দেশ দেন বারাণসীর নিম্ন আদালত। তা সম্পন্ন করাও হয়। এর পর গত ২২ সেপ্টেম্বর পুজারীপক্ষ কার্বন ডেটিং পরীক্ষার দাবি তোলে।

ভিডিওসমীক্ষার কাজ শেষ হওয়ার পর গত ২০ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলার শুনানির দায়িত্ব পান বারাণসী জেলা আদালত।

মামলায় মসজিদ কমিটি দাবি করছে,  ওজুখানার জলাধারে শিবলিঙ্গের মতো আকৃতির যে কাঠামোর খোঁজ পাওয়ার দাবি করা হচ্ছে তা আসলে ফোয়ারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্দিরের পক্ষ তাদের দাবি প্রমাণে কার্বন ডেটিং পরীক্ষার আবেদন জানিয়েছিল।

গত ৭ অক্টোবর মামলার শুনানিতে জেলা আদালতের বিচারক দুটি বিষয়ে আবেদনকারীদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চান। প্রথমত, ওই কথিত শিবলিঙ্গকে এই মামলার অংশ করা যায় কি না। দ্বিতীয়ত, আদালত কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার নির্দেশ দিতে পারে কি না। পুজার আবেদনকারীদের মুখ্য আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন তার যুক্তিতে দাবি করেন, শিবলিঙ্গের বিষয়টি মামলার অংশ হতে পারে।

কার্বন ডেটিং পরীক্ষা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের নানা মত রয়েছে। কোনো প্রত্নবস্তুর বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা বিতর্কের উর্ধ্বে নয়। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

LEAVE A REPLY