লোগো
সাইবার সন্ত্রাসীদের হাতে পরিচালিত কানাডাভিত্তিক নাম সর্বস্ব নাগরিক টিভির চাঁদাবাজির কবলে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। বিভিন্ন বিনিয়োগপ্রতিষ্ঠান ও শেয়ারবাজারে বড় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে ফেসবুক-ইউটিউব ভিত্তিক এ চক্রটি।
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে নাগরিক টিভির বিরুদ্ধে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে বিভিন্ন সময় ফেসবুক ও ইউটিউবে বিতর্কিত এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর প্রমাণ রয়েছে এ চক্রটির বিরুদ্ধে। তাদের অপপ্রচার থেকে বাদ যায়নি দেশের প্রধানমন্ত্রী, সাবেক ও বর্তমান সেনাপ্রধান, সাবেক পুলিশপ্রধানও (আইজিপি)।
এ চক্রটি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে থাকে- এটা প্রমাণিত হয়েছে। সম্প্রতি একটি বড় শিল্পগ্রুপ থেকে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছে। এ তথ্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এর পর নিজেরা এই চাঁদাবাজিকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাবি করে আসছিল। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে- বিদেশে এসব টাকা কোন মাধ্যমে নেয়া হলো। মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচারের অভিযোগ ওঠে বিতর্কিত নাগরিক টিভির বিরুদ্ধে।
এবার চাঁদা না পেয়ে দেশের শেয়ারবাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে চক্রটি। শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে নিয়ে সম্প্রতি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করেছে চাঁদাবাজ চক্রটি। নাগরিক টিভির ফেসবুক পেইজে গত বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে ব্যাঙ্গ ছবিটি প্রকাশ করা হয়। জানা যায়, সম্প্রতি শেয়ারবাজারকে অস্থিতিশীলের অপচেষ্টায় লিপ্ত একটি চক্রের যোগসাজশে গুজব ছড়াচ্ছে নাগরিক টিভি নামের ভুয়া ফেসবুক পেইজটি। এ চক্রের দেশীয় এজেন্টদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
জানা যায়, গুজব ছড়ানো এসব ফেসবুক-ইউটিউব পেইজ ও চ্যানেলের পরিচালক টিটু রহমান ও নাজমুস সাকিব। সম্প্রতি সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি ১৫ জন সাইবার সন্ত্রাসীকে শনাক্ত করেছে, যারা বিদেশে বসে বাংলাদেশবিরোধী ভয়ংকর অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। এরা রাষ্ট্র, সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে নানাভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। এই তদন্তে নাজমুস সাকিবের সংশ্লিষ্টতাও পাওয়া গেছে।
মরক্কোতে অবস্থানরত বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী-রুবাইয়াত-উল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, একটি চক্র দেশের শেয়ারবাজারকে নিয়ে বিভিন্ন সময় নেতিবাচক এবং ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ায়। তারই ধারাবাহিকতায় বড় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে নাম সর্বস্ব বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ পেয়েছি।
<জানা গেছে, কোনও ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর আগে ব্যাঙ্গাত্মক ছবি পোস্ট করা হয়ে থাকে চক্রটির ফেসবুক পেইজে। ছবি পোষ্টের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ফোন দিয়ে দাবি করা হয় চাঁদা। চাঁদা না দিলে অপপ্রচার চালানোর হুমকি দেয়া হয়। বিভিন্ন সময় শেয়ারবাজারের বড় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ দাবি করে আসছে এ চক্রটি। এরই ধারাবাহিকতায় সমবায় কর্মকর্তা আবুল খায়ের হিরুকে ফোন দিয়ে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি বিদেশি নম্বর থেকে কল দিয়ে এ চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দিলে তার নামে নেতিবাচক কন্টেন্ট আপলোডের হুমকি দেয়া হয়।
আবুল খায়ের হিরু এ বিষয়ে বলেন, সন্ধ্যা ৭টায় অপরিচিত বিদেশি নম্বর থেকে কল আসে। পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা না দিলে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হবে বলে হুমকি দেয়। কলদাতার নাম-পরিচয় একাধিকবার জানতে চেয়েছি। কিন্তু পরিচয় দেয়নি। শুধু বলেছে নাগরিক টিভি থেকে কল দেয়া হয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, এটি বাংলাদেশের নাগরিক টিভি নয়, ভুয়া তথ্য ও গুজব ছড়ানো বিতর্কিত ফেসবুক-ইউটিউবভিত্তিক নাগরিক টিভি।
ফেসবুক-ইউটিউবভিত্তিক নাগরিক টিভির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি