জলবায়ু পরিবর্তন: শুধুই নিষ্ফল অঙ্গীকার

The Rim Fire in the Stanislaus National Forest near in California began on Aug. 17, 2013 and is under investigation. The fire has consumed approximately 149, 780 acres and is 15% contained. U.S. Forest Service photo.

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের দাবানলের ঘটনা বেড়েছে। ছবি: এএফপি

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গীকার করেছে। সেসব অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এখনো দূর অস্ত। আর সেই সুযোগে বিশ্ব আরো প্রায় ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস উত্তপ্ত হওয়ার পথে হাঁটছে।  

জাতিসংঘ গত বুধবার এ নিয়ে সতর্ক করেছে।

সংস্থাটি বলছে, বিপর্যয়কর পরিস্থিতির লাগাম টানতে এ দশকে নিঃসরণ অবশ্যই ৪৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে।

জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি নিজেদের বার্ষিক নিঃসরণ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত বছর গ্লাসগোতে কপ২৬ সম্মেলনে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে ২০৩০ সাল নাগাদ নিঃসরণ কমবে মাত্র ১ শতাংশেরও কম।

প্রতিবেদন প্রকাশের এক দিন পরেই জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থা ইউএনইপির পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে সতর্কবার্তা। বলা হয়েছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১.৫ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে কিছু করার কাছাকাছি অবস্থানেও নেই দেশগুলো। সংস্থাটি আরো বলেছে, নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে অগ্রগতি দুঃখজনকভাবে অপর্যাপ্ত।

বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ নিয়ে আইইএর সতর্কবার্তা
এদিকে গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নাগাদ বৈশ্বিক জ্বালানি সংশ্লিষ্ট কার্বন নিঃসরণ সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

গত বছরই আইইএ বলেছিল, ‘কোনো চূড়ান্ত মাত্রা নেই। ’ কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পাল্টে গেছে সেই পরিস্থিতি। বায়ু ও সৌরশক্তি খাতে নতুন করে উচ্চমাত্রার বিনিয়োগ সব ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদাকে শীর্ষে নিয়ে যাবে এবং এর জেরে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে মোট কার্বন নিঃসরণ কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সংস্থাটির প্রকাশিত সর্বশেষ বার্ষিক বিশ্ব জ্বালানিসংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট গভীর এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জেরে আরো টেকসই নিরাপদ জ্বালানি ব্যবস্থার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আইইএর অনুমান, ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানি মূল্যের মুখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের সর্বশেষ নীতি ও পদক্ষেপে পরিচ্ছন্ন শক্তি খাতে বিনিয়োগ বর্তমানের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে নবায়নযোগ্য এবং পরমাণুশক্তি খাতে উল্লেখযোগ্য সফলতা আসবে।

আইএ বলছে, ’এর ফলাফল হিসেবেই ২০২৫ সাল নাগাদ বৈশ্বিক নিঃসরণ শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছবে। ’ 

ঐতিহাসিক চুক্তি
বৃহস্পতিবার গাড়ির কার্বন নিঃসরণ প্রশ্নে আইন তৈরিতে এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ওই চুক্তির অধীনে ২০৩৫ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণকারী নতুন গাড়ি বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ইউরোপীয় কাউন্সিল এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের আলোচনা শুরু হয় বৃহস্পতিবার। পরে ইইউ সদস্য ফ্রান্সের প্যাসকাল ক্যানফিন এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমরা এইমাত্র গাড়ির জন্য কার্বন মানদণ্ড বিষয়ে আলোচনা শেষ করলাম। ’ এটাকে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত আখ্যা দিয়ে 
তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে ২০৩৫ সাল নাগাদ গাড়ি থেকে কার্বন নিঃসরণ শতভাগ বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বর্তমানে ইউরোপের মোট কার্বন নিঃসরণের প্রায় ১৫ শতাংশই আসে গাড়ি থেকে। আর গোটা পরিবহন খাত থেকে আসে প্রায় ২৫ শতাংশ। সূত্র : এএফপি

LEAVE A REPLY