ইংলিশ সাফল্যের রেসিপি ব্যাটিং

ফাইনালে আপনি হয়তো কোনো দলেরই সমর্থক নন। তাহলে বিশ্বকাপের ফাইনালটা কিভাবে উপভোগ করবেন? উপভোগ করতে পারেন একেবারে ক্রিকেটীয় জায়গা থেকে। পাকিস্তানের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সঙ্গে দারুণ ইংলিশ ব্যাটিংয়ে জমে উঠতে পারে শিরোপার ম্যাচটা।

পাকিস্তানের ফাস্ট বোলিংয়ের সামর্থ্য কমবেশি সবার জানা হয়ে গেছে।

ইংলিশ ব্যাটিংয়ের শক্তিটা দেখা গেছে ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে। বাটলার ও হেলসের ব্যাটিংয়ে ১০ উইকেটে হারা ভারতের সব দম্ভ চূর্ণ হয়েছে। ভারতের আধমরা বোলিংও একটা কারণ ছিল। সেই জায়গাতেই পাকিস্তানের শক্তি এবং নির্ভরতা। পাওয়ার প্লেতে তাদের ফাস্ট বোলাররা বেশ মিতব্যয়ী, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইকোনমি রেট (৬.১৯)। ওখানেই ইংল্যান্ডকে খেলতে হবে খুব হিসাব করে। ওই ইংলিশ ওপেনিং জুটির ওপরই দায়িত্ব বেশি। পাওয়ার প্লেতে পাকিস্তানি ফাস্ট বোলারদের ওপর বেশি চড়াও হতে গেলেই উইকেট হারানোর শঙ্কা থাকবে। তাই জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলসের খুব বিলাসী শট খেলার অভ্যাস বাদ দিতে হবে। সে রকম খেলতে গেলে শ্রীলঙ্কার ম্যাচের অবস্থাও হতে পারে।

গ্রুপের শেষ ম্যাচে লঙ্কানদের দেওয়া ছোট টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে ধসে পড়েছিল তাদের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ। শেষে বেন স্টোকস হাল ধরায় জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলতে পারে ইংল্যান্ড। তাই ফাইনালেও শুরুতে উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রেখে দুই ব্যাটারকে অপেক্ষা করতে হবে বোলিং পরিবর্তনের।

kalerkantho

শাহীন-নাসিমের বিপক্ষে ওপেনিং জুটি উতরে গেলে চাপে পড়ে যাবে পাকিস্তান। তখন স্কোরবোর্ডে কিছু রানও হবে এবং সহজ হয়ে যাবে ইংলিশ ব্যাটারদের ব্যাটিং। বিশাল ব্যাটিং লাইনআপ এবং তার শক্তির সুফলটাও তারা ঘরে তুলতে পারবে। পাকিস্তানকে ব্যাকফুটে ফেলতে হলে ব্যাটিং দিয়েই করতে হবে ইংল্যান্ডকে। তাই দুর্দান্ত বোলিংয়ের বিপক্ষে ইংলিশ ব্যাটারদের ইনিংস গড়াটা খুব জরুরি এই ম্যাচে। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগেই তারা পাকিস্তান গিয়ে সেই বোলিংয়ের বিপক্ষে খেলেছে সাত ম্যাচের এক সিরিজ। ৪-৩ ম্যাচে সিরিজ জয়ী ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার চান সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে, ‘ওটা (সিরিজটা) আমাদের জন্য খুব ভালো ছিল। ’ এরপর যোগ করেন, ‘এখানেও (বিশ্বকাপ) দারুণ এক লড়াই হতে যাচ্ছে, যেটি অবশ্যই উপভোগ্য হবে। দলের সবাইকে আমি উৎসাহিত করছি সেই স্বাধীনতা নিয়ে খেলার জন্য। ’

আগ্রাসী ব্যাটিং না হলে ইংল্যান্ডের পক্ষে ফাইনালে টিকে থাকা কঠিন হবে। কারণ বোলিংয়ে তাদের পাকিস্তানের মতো সামর্থ্য নেই। বিশেষ করে নতুন বলে তাদের বোলিং প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না এই টুর্নামেন্টে, বেশ খারাপ পাওয়ার প্লে স্ট্রাইকিং রেট (৩০)। কাল ফাইনালেও সেই ধারা বজায় থাকলে বিপদের শঙ্কা থাকবে। পাকিস্তানের দুর্বলতা ব্যাটিংয়ে হলেও বাবর আজম ও রিজওয়ান টিকে গেলে জয়ের পেন্ডুলাম ঘুরে যাবে পাকিস্তানের দিকে। কয়েক বছর ধরে এই দুই ব্যাটারে পাকিস্তানের উত্তরণ। বাবর খারাপ সময় কাটিয়ে নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন সেমিফাইনালে। আপাতভাবে দুজনের ব্যাটেই রান আছে। ফাইনালেও এই উদ্বোধনী জুটি দাঁড়িয়ে গেলে পাকিস্তানের সাফল্যের রাস্তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাই ইনিংসের শুরুতে এই জুটি ভাঙা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই ইংল্যান্ডের সামনে।

সেমিফাইনালে ইনজুরির কারণে একাদশের বাইরে ছিলেন ফাস্ট বোলার মার্ক উড। তাঁর জায়গায় আসা ক্রিস জর্ডান ৪৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ম্যাচের আগে ইনজুরির অবস্থা দেখার পরই উডের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। তবে ভারতকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারের কণ্ঠ আত্মবিশ্বাসে ভরপুর, ‘আমার বিশ্বাস, আমরা ভালো দল এবং পারফরম করতে শুরু করেছি। দলে এমন কয়েকজন চমৎকার খেলোয়াড় আছে, তারা সেরাটা দিলে আমাদের হারানো কঠিন হয়ে যাবে। ’ এরপর নিজেই ইংল্যান্ডকে ‘দারুণ বিপজ্জনক’ দল বলে সম্বোধন করে যেন ফাইনালের সতর্কবার্তা দিয়ে দিলেন প্রতিপক্ষকে। এএফপি

LEAVE A REPLY