ইরানে নিহত বিক্ষোভকারীর সংখ্যা ৩২৬ : আইএইচআর

ইরানের রাজধানী তেহরানের রাস্তায় বিক্ষোভ। (ছবি : এএফপি)

পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে ইরান জুড়ে বিক্ষোভের বিরুদ্ধে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ৩২৬ জন নিহত হয়েছে। অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

আইএইচআর-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দেশব্যাপী চলমান বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৪৩ শিশু ও ২৫ নারীসহ অন্তত ৩২৬ জন নিহত হয়েছে। ‘ তারা এখনো মৃত্যুর অন্য প্রতিবেদনগুলো তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে, যার অর্থ নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ‘অবশ্যই বেশি’।

মানবাধিকার গোষ্ঠীটি ৫ নভেম্বর তাদের আগের পরিসংখ্যান প্রকাশ করার পর থেকে এবারের পরিসংখ্যানে নিহতের সংখ্যা ২২ জন বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে ইরানের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে কমপক্ষে ১২৩ জন নিহতের সংখ্যাও রয়েছে।

৩০ সেপ্টেম্বর সিস্তান-বেলুচিস্তানের রাজধানী জাহেদানে জুম্মার নামাজের পর নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালালে তাদের বেশিরভাগই নিহত হয়। বিক্ষোভকারীরা এ ঘটনাকে ‘ব্লাডি ফ্রাইডে’ বা ‘রক্তাক্ত শুক্রবার’ নামে অভিহিত করেছেন। প্রদেশের বন্দর শহর চাবাহারে একজন পুলিশ কমান্ডার ১৫ বছর বয়সী একটি মেয়েকে হেফাজতে নিয়ে কথিত ধর্ষণের কারণে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বালুচিরা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়েছিল, যা প্রাথমিকভাবে নারীদের অধিকার নিয়ে চললেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য সমস্যাও বিক্ষোভে যোগ হতে শুরু করে।

আইএইচআর-এর পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইরানের এই অচল অবস্থা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আরেকটি মানবাধিকার গোষ্ঠী অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে এবং এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ একটি পিটিশন স্বাক্ষর করে এতে সমর্থন দিয়েছে।

নারীদের জন্য দেশটির কঠোর পোষাক নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগে আমিনিকে গ্রেপ্তারের তিনদিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরান জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে নারীদের জন্য পোশাকের নিয়মের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ পেলেও পরে তা ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে ইরানে শাসনকারী ধর্মতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি বিস্তৃত আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। সূত্র : আল অ্যারাবিয়া

LEAVE A REPLY