রাশিয়া থেকে মোংলায় এলো ৪২ হাজার টন গম

বাজারমূল্যের অস্থিরতা ও সংকট মোকাবিলায় যুদ্ধপরিস্থিতির মধেই রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, মোংলা বন্দরে খালাস হয়েছে ৪২ হাজার টন গম। দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলার জন্য আমদানি করা এ গম মজুদ করা হচ্ছে মোংলা সাইলোতে। আগামী সপ্তাহে আরও একটি গমের চালান নিয়ে বন্দরে ভেড়ার কথা রয়েছে একটি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ। পর্যায়ক্রমে গমের এ চালান পৌঁছালে বাজারের অস্থিরতা কমে যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে বছরে প্রায় ৭৫ লাখ টন গমের চাহিদা রয়েছে। এ গমের ৬৫ লাখ টন ভারত, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে আমদানি করতে হয়। চলতি বছরের (জানুয়ারি-নভেম্বর) ১১ মাসে ৪টি বিদেশি জাহাজে করে ৮৪ হাজার টন গম মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে। নতুন করে রাশিয়া থেকে আমদানি করা হবে আরও পাঁচ লাখ টন গম। চুক্তি অনুযায়ী গেল সপ্তাহে বিদেশি দুটি জাহাজে করে আনা সেই গম মোংলা বন্দরের জয়মনি খাদ্যগুদামে (সাইলো) লাইটার জাহাজের মাধ্যমে খালাস প্রক্রিয়া চলছে।

গমবাহী বিদেশি জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্টের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ এরফান জানান, রাশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ লাখ টন গম আমদানি হবে। আমদানি গমের ৬০ ভাগ চট্টগ্রাম বন্দরে আর ৪০ ভাগ মোংলা বন্দরে খালাস হবে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে মাল্টা পতাকাবাহী ‘এমভি শ্রিলাক’ ও লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী ‘এম ভি লিলা’ নামে দুটি জাহাজে আসা ৪২ হাজার টন গম মোংলা বন্দরে খালাস হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এই বন্দরে আরও একটি গমের চালান আসবে। বিদেশি ১০টি বাণিজ্যিক জাহাজে করে রাশিয়া থেকে আনা হবে পাঁচ লাখ টন গমের পুরো চালান। রাশিয়া থেকে আনা টনপ্রতি ৪৩০ ডলার দরে এসব গম বাজারে এলে স্বস্তি ফিরবে বলে জানান আমাদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।

মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী এইচএম দুলাল বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের উচ্চমূল্য। তাই দেশের বাজারেও প্রভাব পড়েছে। বাজারমূল্যের সংকট মোকাবিলায় বিকল্প উৎস সন্ধান এবং পাইপ লাইনে থাকা বিভিন্ন দেশ থেকে গম দ্রুত আনতে হবে।

এদিকে মোংলা সাইলো সুপার (সরকারি খাদ্য গুদাম) অরূপ কুমার মিশ্র বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশে আমদানি হওয়া গমের অর্ধেকেরও বেশি এসেছিল ভারত ও বুলগেরিয়া থেকে। তবে ভারতীয় গম আমদানি কিছুদিন বন্ধ থাকায় সংকট দেখা দেয়। এখন ইউক্রেন থেকে গম না এলেও রাশিয়া থেকে প্রচুর গম আসছে, তাই দেশে গমের সংকট হবে না।

তিনি বলেন, মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া গম প্রথমে মোংলা সাইলোতে মজুদ করে রাখা হয়। এখান থেকে নদী পথে দেশের ১৯ জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এই মুহূর্তে মোংলা সাইলোতে ৪৫ হাজার টন গম মজুদ আছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, চলতি বছরের ৬ মার্চ ভারত থেকে ‘এমভি বাল্ক ম্যানারা’, ১ জুন ‘এমভি ইমানুল’, ২৩ অক্টোবর রাশিয়া থেকে ‘এমভি শ্রিলাক’ ও ৮ নভেম্বর ‘এমভি লিলা’ নামে বিদেশি জাহাজে করে মোংলা বন্দরে গম আমদানি হয়েছে। খাদ্য পণ্য দ্রুত খালাস বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন নির্গমন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY