মনিরুজ্জামান মনিরের ৩টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার চুরি

গীতিকবি মনিরুজ্জামান মনির

৩ নভেম্বর রাতে গীতিকবি মনিরুজ্জামান মনিরের বাসার জানালা ভেঙে মোট পাঁচটি পুরস্কারের ট্রফি নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর টের পান তিনি। এরপর সেগুলো উদ্ধারের লক্ষ্যে ৫ নভেম্বর বাড্ডা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরি নম্বর ৩৬১।

পুলিশ তাঁর বাসা পরিদর্শন করে উদ্ধারের আশ্বাস দিয়ে যান। কিন্তু এখনও (২৩ নভেম্বর) পর্যন্ত এ বিষয়ে পুলিশের কাছে আর কোনও অগ্রগতি মেলেনি।

জানা গেছে, রাতে তাঁর পশ্চিম মেরুল বাড্ডার বাসার জানালা ভেঙে চুরি হওয়া এই ট্রফিগুলোর মধ্যে ৩টিই ছিলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

মনিরুজ্জামান মনিরের চুরি যাওয়া ৩টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে, ১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দুই জীবন’ সিনেমার ‘তুমি ছাড়া আমি একা পৃথিবীটা মেঘে ঢাকা’, ১৯৮৯ সালের ‘চেতনা’ ছবির ‘এই হাত করে নাও হাতিয়ার’ এবং ১৯৯০ সালের ‘দোলনা’ চলচ্চিত্রের ‘তুমি আমার কত চেনা’ গানগুলো।

বলা বাহুল্য, বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম সফল এবং খ্যাতিমান গীতিকবি মনিরুজ্জামান মনির। আশির দশকের শেষভাগ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত একটানা গান রচনা করেছেন তিনি। এর মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি গান হলো- ‘বুকে আছে মন, মনে আছে আশা’, ‘কী জাদু করিলা পিরিতি শিখাইলা’, ‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে, কী দিয়া মন কাড়িলা’, ‘তোমাকে চাই আমি আরও কাছে’, ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘ও আমার বন্ধু গো চির সাথি পথচলার’, ‘আমি চিরকাল প্রেমেরও কাঙাল’ ইত্যাদি।  

সিনেমায় তার লেখা সর্বশেষ জনপ্রিয় গান ‘এক বিন্দু ভালোবাসা দাও, আমি এক সিন্ধু হৃদয় দেবো’। এছাড়া অডিও ভুবনেও মনিরুজ্জামান মনির প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। লিখেছেন ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’, ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন’, ‘সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি’র মতো বিখ্যাত সব গীত।

ঘটনাটি আমাদের জন্য বেশ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, চুরির ঘটনার পর যথাযথ প্রক্রিয়ায় পুলিশি সহায়তা চেয়েছেন মনিরুজ্জামান মনির। কিন্তু হতাশার বিষয় এই যে, ২০ দিনেও (২৩ নভেম্বর) ট্রফিগুলো উদ্ধার হয়নি কিংবা কারা চুরি করেছে সেটিও চিহ্নিত করা হয়নি। যা আমাদের জন্য হতাশার বিষয়।

এদিকে গীতিকারের বাসায় চুরির ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে গীতিকবি সংঘ। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলছে,  দেশের নন্দিত এই অগ্রজ গীতিকবির চুরি হওয়া সম্মান পুনরুদ্ধারের বিষয়টি সাংগঠনিকভাবে জোর দাবি জানাই পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি। আমরা চাই অবিলম্বে ট্রফিগুলো উদ্ধার এবং দোষীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।     

LEAVE A REPLY