হাঁসের ডিম নাকি মুরগির? কোনটায় পুষ্টি বেশি

ডিম হলো প্রোটিনের একটি পুষ্টিকর এবং সাশ্রয়ী মূল্যের উৎস, যা মানুষ লাখ লাখ বছর ধরে খাচ্ছে। ডিমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় মুরগির ডিম। মুরগির ডিম ছাড়াও আছে হাঁস, কোয়েলের ডিম। হাঁসের ডিমের জনপ্রিয়তা রয়েছে বিশ্বের অন্যান্য স্থানে।

আমাদের দেশেও খাওয়া হয়। আজ হাঁসের ডিম এবং মুরগির ডিমের মধ্যে পুষ্টির পার্থক্য সম্পর্কে জানব।  

মৌলিক পার্থক্য

সাধারণত হাঁস এবং মুরগির ডিম অনেকটা একই রকম। তবুও কয়েকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা দিয়ে এই দুটি ডিমকে আলাদা করা যায়।

আকার

শারীরিক গঠনে সবচেয়ে লক্ষণীয় পার্থক্য হলো ডিমের আকার। একটি হাঁসের ডিম মুরগির ডিমের চেয়ে ৫০-১০০ শতাংশ বড় হতে পারে। একটি হাঁসের ডিম খাওয়া মানে দেড়টা বা দুটি মুরগির ডিম খাওয়ার মতো।

মুরগির ডিমের মতো হাঁসের ডিমের রংও হাঁসের জাত এবং এদের খাদ্যের ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। আবার কোন পরিবেশে বেড়ে উঠছে এবং এর জেনেটিকসের ওপরও নির্ভর করে। অনেক হাঁসের ডিমে সাদা শাঁসের মতো থাকে। এগুলোর রং হতে পারে ফ্যাকাসে ধূসর, সবুজ, কালো বা নীল রঙের। কুসুমের আকার এবং রং উভয়ের ক্ষেত্রেই আলাদা। মুরগির ডিমের কুসুম সাধারণত ফ্যাকাসে বা উজ্জ্বল হলুদ হয়। হাঁসের ডিমের কুসুম গাঢ় কমলা হতে পারে।  

পুষ্টিগুণ

>> মুরগির ডিমের তুলনায় হাঁসের ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকে।  

>> প্রতি ১০০ গ্ৰাম হাঁসের ডিমে প্রোটিন রয়েছে ১৩.৫ গ্ৰাম‌। এদিকে ১০০ গ্রাম মুরগির ডিমে থাকে ১৩.৩ গ্ৰাম প্রোটিন।  

>>  মুরগির ডিমে হাঁসের ডিমের তুলনায় কম চর্বি থোকে।

>> ১০০ গ্ৰাম মুরগির ডিমে চর্বি আছে ১৩.৩ গ্ৰাম। অন্যদিকে, ১০০ গ্ৰাম হাঁসের ডিমে চর্বি আছে ১৩.৭ গ্ৰাম।  

>> প্রতি ১০০ গ্ৰাম হাঁসের ডিম থেকে ১৮১ ক্যালোরি শক্তি মেলে। ‌ অন্যদিকে মুরগির ডিমে শক্তির পরিমাণ ১৭৩ ক্যালোরি।  

>>১০০ গ্ৰাম মুরগির ডিমে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ৬০ মিলিগ্ৰাম এবং সমপরিমাণ হাঁসের ডিমে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় ৭০ মিলিগ্ৰাম।  

>>১০০ গ্ৰাম মুরগির ডিমে আয়রন ২.১ মিলিগ্ৰাম। অন্যদিকে হাঁসের ডিমে রয়েছে ৩ মিলিগ্ৰাম আয়রন।

>> ১০০ গ্ৰাম হাঁসের ডিমে ভিটামিন এ রয়েছে ২৬৯ মাইক্রোগ্ৰাম এবং মুরগির ডিমে আছে ২৯৯ মাইক্রোগ্ৰাম। মুরগির ডিমে ভিটামিন এ বেশি।

কোনটা ভালো?

হাঁসের ডিম বা মুরগির ডিম ভালো কি না তা ব্যক্তিগত পছন্দের ওপর নির্ভর করে। এর সঠিক কোনো উত্তর নেই।  

হাঁসের ডিম এবং মুরগির ডিমের মধ্যে নির্বাচন করার সময় আপনি কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে পারেন।

** অ্যালার্জি :  সাধারণত মুরগির ডিমে যাদের  অ্যালার্জি আছে তারা হাঁসের ডিম খেতে পারেন।  

** স্বাস্থ্যগত সমস্যা : আপনার স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিন।  হার্টের কোনো সমস্যা থাকলেও পরামর্শ নিন।  

** ব্যক্তিগত স্বাদ : কেউ কেউ এক ধরনের ডিমের স্বাদ অন্যটির চেয়ে পছন্দ করতে পারে।

** দাম : মুরগির চেয়ে হাঁসের ডিমের দাম একটু বেশি। এ ক্ষেত্রে আপনাকেই বিবেচনা করতে হবে কোনটি খাবেন।   

সূত্র : হেল্থ লাইন এবং হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা

LEAVE A REPLY