জাতীয় উন্নয়ন আখ্যান ও স্থানীয় ভাবনা শীর্ষক এক ব্রিফিং। ছবি : কালের কণ্ঠঅ-অঅ+
দেশব্যাপী প্রাথমিকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু শিক্ষার গুণগত মানের পতন হচ্ছে বলে মনে করেন এসডিসি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে অনেকেই আর্থিক সংগতির অভাবে শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ছে। যে উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে তা দিয়ে সমগ্র শিক্ষার খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে স্বাস্থ্য খাতে মানের উন্নয়ন হচ্ছে না।
যদিও বড় বড় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হচ্ছে, হাসপাতাল হচ্ছে কিন্তু সেখানে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে না।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘জাতীয় উন্নয়ন আখ্যান ও স্থানীয় ভাবনা’ শীর্ষক এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য খাতওয়ারি আলোচনায় পাঁচটি বিষয় তুলে ধরেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন জায়গায় সুপেয় পানির অভাব এবং পয়োনিষ্কাশনের জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে’ যা স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও ঝুঁকির সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া সামাজিক সুরক্ষার পরিমাণ পর্যাপ্ত নয়। রয়েছে সড়ক নিরাপত্তার অভাবের কথা। সঠিক পরিবহন ব্যবস্থার অভাবের ফলে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘যদিও বাংলাদেশে মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন হচ্ছে, আয় বাড়ছে কিন্তু তার মধ্যে অসমতা বিদ্যমান এবং সকল মানুষের কাছে এ উন্নয়নের ধারা সমানভাবে যাচ্ছে না। এ ছাড়া যুবসমাজের ক্ষেত্রে মানসম্মত কর্মসংস্থানের অভাব আছে। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধিও পিছিয়ে পড়া মানুষের জনজীবনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। ’
নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়টিকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারীদের অবদান সমাজে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলেও তাদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ হচ্ছে না। অন্যদিকে পরিবেশদূষণের বিষয়টিকেও ড. দেবপ্রিয় জাতীয় সমস্যা বলে মনে করেছেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি সেবার যথোপযুক্ত মানের অভাবের বিষয়টি রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করনে।
বর্তমানে সমাজে একটি ভয়ের সংস্কৃতির সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে মানুষ তাদের বাকস্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং নিজেদের অধিকার আদায়ের কথা বলা থেকে সংযত থাকছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এ সময় সমাপনী বক্তব্যে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজকে তৃণমূলের বক্তব্য উপস্থাপন হয়েছে, যেখানে দুটি বিষয় উঠে এসেছে, তা হলো বণ্টনের দিক এবং আকাঙ্ক্ষার দিক।
‘উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে গড়ের সমীকরণ আমাদের সমাজে আছে সেখান থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই গড়ের কাছাকাছি স্থানীয় মানুষদের তখনই আনা সম্ভব যদি ইতিবাচক বৈষম্যমূলক আলোচনা হয় এবং তা হতে হবে রাষ্ট্রীয়ভাবে। ’
আকাঙ্ক্ষার ক্ষেত্রে তিনি বলেন, দৃশ্যমান যে উন্নয়ন হয়েছে সেখানকার দৃশ্যের সাথে মানের ব্যাপারেও গুরুত্ব দিতে হবে।