প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

ছবি: সংগৃহীত

মো. আজিম উদ্দিন, সাভার (ঢাকা) থেকে: মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে চলছে শোভা বর্ধনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত বিজয়কে ৫১তম বারের মতো বরণ করবে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীসহ সর্বস্তরের জনগণ।

আর মাত্র একদিন পরই মহান বিজয় দিবস। প্রস্তুত রয়েছে লাল-সবুজ গালিচার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা সাত স্তম্ভের স্মৃতিসৌধ। এদিন লাখো মানুষের শ্রদ্ধায় সিক্ত হবে স্মৃতিসৌধের বেদি। তাতে প্রস্ততির কোনো ঘাটতি রাখেনি গণপূর্ত বিভাগ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

গণপূর্ত বিভাগের কয়েকশ কর্মীর নিরলস পরিশ্রমে স্মৃতিসৌধ এলাকাটি পেয়েছে এক নতুন রূপ। স্মৃতিসৌধ চত্বরের চারপাশে টবে টবে শোভা পাচ্ছে রঙিন ফুল। ছোট্ট গাছের সারিতে তৈরি করা হয়েছে লাল-সবুজের পতাকা। রংয়ের তুলিতে স্থাপনাগুলো সাজছে নতুন রূপে। এবার আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে ধুয়ে-মুছে চকচকে করা হয়েছে স্মৃতিসৌধ চত্বরের প্রতিটি স্থাপনা। জাতীয় স্মৃতিসৌধে গার্ড অব অনারের জন্য তিন বাহিনীর কুচকাওয়াজ ও গাড়িবহরের মহড়াও শেষ। এখন শুধু অপেক্ষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো।

এরই মধ্যে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা ধুয়েমুছে পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। এখন বিভিন্ন স্থাপনা ও সিঁড়িতে রংতুলির আঁচড়ে সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি শোভা বর্ধনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ফুলের চারা রোপণ করা হচ্ছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর প্রথম প্রহরে স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, বিভিন্ন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ।

সরজমিন দেখা গেছে, স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটক ও দ্বিতীয় ফটকের সামনে সড়কের ডিভাইডারসহ বিভিন্ন স্থাপনা এবং সিঁড়িতে রংতুলির কাজ চলছে। স্মৃতিসৌধের ভেতরে বাহারি ফুলের চারা দিয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি আলোকসজ্জার বাতি সংযোজন করা হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা তা রয়েছে সিসিটিভির আওতায়। শতাধিক শ্রমিক মিলে স্মৃতিসৌধের লেকের পাড় সংস্কারের পাশাপাশি পানি পরিষ্কার করার কাজ চলছে। এ ছাড়াও পুরো স্মৃতিসৌধের ৮৪ একর জায়গার বিভিন্ন স্থাপনায় পাইপের পানি দিয়ে পরিষ্কার এবং সিমেন্ট দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মেরামত করা হচ্ছে।

এদিকে বিজয় দিবস উদ্যাপন নির্বিঘœ করতে স্মৃতিসৌধ এলাকার সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ফুটপাতে অবৈধ স্থাপনা তুলে দেয় হয়েছে। আমিন বাজার থেকে নবীনগর পর্যন্ত মহাসড়কের দুপাশের আইল্যান্ডে ফুলের গাছ ছাঁটাই ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রংতুলির আঁচড়ে রাঙানো হয়েছে। বিশেষ নিরাপত্তার জন্য এরই মধ্যে ৪ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জনসাধারণের জন্য তা উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

স্মৃতিসৌধ এলাকায় ডিজিএফআই, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। গণপূর্ত বিভাগের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে গত দেড় মাস ধরে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়েছে। ফুল দিয়ে সাজানো, লেক সংস্কার, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সব ধরনের কাজ পুরোপুরি শেষ। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রস্তত। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছেন।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মো. সবুর খান বলেন, এরই মধ্যে সৌধ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। নিñিদ্র নিরাপত্তায় ঢেকে রাখা হয়েছে পুরো স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ।এসএম 

LEAVE A REPLY