ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩১৪ রানে অলআউট হয়েছে ভারত। দিন শেষে ৮৭ রানের লিড নিয়েছে বিরাট কোহলিরা।
আগের দিন শেষ বিকেলে বেশ কয়েকবার ভাগ্যগুণে বেঁচে যায় ভারত। বিনা উইকেটে তুলেছিল ১৯ রান। তবে ধীরগতিতে এগিয়ে চলা ভারতের ওপেনিং জুটিটা খুব বড় হয়নি। সকাল সকালই আঘাত হেনেছেন তাইজুল ইসলাম। তার ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। ইনিংসের ১৪তম ওভারে প্রথম উইকেট হারিয়েছে ভারত। ভেঙেছে ২৭ রানের উদ্বোধনী জুটি। আম্পায়ার অবশ্য আউটটি দিতে চাননি। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল রাহুলের (১০) মিডল অ্যান্ড লেগ স্টাম্পে আঘাত করতো। নিজের পরের ওভারে আরেকটি এলবিডব্লিউ তাইজুলের। এবার সুইপ করতে গিয়ে বল মিস করেন শুভমান গিল (২০)। আবেদনে আঙুল তুলে দিতে দেরি করেননি আম্পায়ার।
তৃতীয় উইকেটে একটি জুটি গড়ে ফেলেছিলেন চেতেশ্বর পূজারা আর বিরাট কোহলি। ৯৪ বল কাটিয়ে গড়া তাদের ৩৪ রানের জুটিটিও ভাঙেন তাইজুল, ইনিংসের ৩১তম ওভারে। তাইজুলের ডেলিভারিটি পূজারা ডিফেন্ড করতে চাইলে ব্যাট-প্যাড হয়ে সেটি চলে যায় শর্ট লেগে মুমিনুল হকের হাতে। ২৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন পূজারা। ৭২ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। ৩৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গেছিলো দলটি। বিরাট কোহলি ১৮ আর ঋষভ পান্থ ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর অবশ্য কোহলি বেশিদূর এগোতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২৪ রানে তিনি হন তাসকিন আহমেদের শিকার। টাইগার পেসারের দুর্দান্ত এক ডেলিভারি বুঝতে না পেরে খোঁচা মেরে বসেন কোহলি। উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান নেন সহজ ক্যাচ।
৯৪ রানেই ভারতের ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। সম্ভাবনা ছিল অল্পতেই গুটিয়ে দিয়ে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার। কিন্তু বিপদ কাটিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় লোকেশ রাহুলের দল। রিশাভ পান্থ আর শ্রেয়াস আইয়ার পঞ্চম উইকেটে গড়েন ১৫৯ রানের বড় জুটি। শেষ পর্যন্ত এই জুটিটি ভেঙেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ, পান্থকে বোকা বানিয়ে। এর আগেও বহুবার নার্ভাস নাইন্টিজে কাটা পড়েছেন রিশাভ পান্ত। নব্বইয়ের ঘরে আসলে তার বোধ হয় বুক ধরফর করতে থাকে। মিরপুর টেস্টে আরও একবার দেখা গেলো তেমনটা। সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় এসে ফিরলেন ভারতীয় এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ১০৪ বলে ৭ চার আর ৫ ছক্কায় মারকুটে ইনিংস খেলা পান্তকে ৯৩ রানে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ বানান মিরাজ। ৩৩ টেস্টের ক্যারিয়ারে ষষ্ঠবারের মতো নার্ভাস নাইন্টিজে ফিরতে হলো তাকে।
পান্ত আউট হওয়ার পর দ্রুতই আরও দুটি উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানকে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত এক ক্যাচ হন অক্ষর প্যাটেল (৪)। বাউন্ডারির কাছে শান্ত ক্যাচটি নিয়ে দারুণভাবে ভারসাম্য সামলে নেন। এরপর সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগানো শ্রেয়াস আইয়ারও ফেরেন ৮৭ করে। সাকিবের ঘূর্ণি সুইপ করতে গিয়ে মিস করেন ডানহাতি এই ব্যাটার, বল লেগে যায় প্যাডে। আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও কাজ হয়নি ভারতের। আশ্বিনকে ১২ রানে এলবিডব্লিউ করেন সাকিব। ১৪ করে উমেশ যাদব হন তাইজুলের শিকার। সিরাজ ফেরেন ৭ করে। সাকিব আল হাসান আর তাইজুল ইসলাম নেন চারটি করে উইকেট। মিরপুর টেস্টে প্রথম দিন টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেওয়া বাংলাদেশ মুমিনুল হকের ৮৪ রানের ইনিংসের পরও ২২৭ রানের বেশি এগোতে পারেনি। ৪টি করে উইকেট নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন আর উমেশ যাদব।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) মিরপুর স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ- ২২৭ রান। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ রান। এখনও পর্যন্ত একটি উইকেটও পড়েনি।ডি- এইচএ