ছবি: সংগৃহীত
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘোচায় আর্জেন্টিনা। ফাইনালে বাঁ দিয়ে দারুণ এক গোল করে দলকে এগিয়ে দেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। এর আগে কোপা আমেরিকার ফাইনালেও ডান পায়ের চিপ থেকে একটি গোল করে দলকে জেতান শিরোপা। সেবার ডান পায়ে ট্যাটু করেছিলেন তিনি। বলা যায় তার দুই পায়েই দুই শিরোপার দেখা পায় আর্জেন্টিনা। তাই বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতি ধরে রাখতে এবার বাঁ পায়ে ট্যাটু করিয়েছেন এই তারকা।
ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বকাপ খরা কাটিয়ে নিজেদের জার্সিতে নতুন আরো একটি তারা যোগ করেছে আর্জেন্টিনা। উদযাপন দেশই নয় উদযাপন করেছে খেলোয়াড়রা। দেশে ফিরে সেই ট্রফি নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন মেসি। শেয়ার করেছিলেন সেই ছবিও। সেই স্রোতে গা ভাসান ফাইনালে গোল করা আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলার অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। নিজের পায়ে বিশ্বকাপ ট্রফি এবং তিনটা স্টারসহ অসাধারণ ট্যাটু করেছেন ডি মারিয়া। নিজের ভেরিভায়েড ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি নিজেই। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেন, অনন্তকালের জন্য এই ট্যাটু করলাম। বিশেষ এই ট্যাটুটি ডিজাইন করেছেন জনপ্রিয় ট্যাটু শিল্পী ইজেকিয়েল ভিয়াপিয়ানো। তার সঙ্গে ট্যাটুসহ নিজের একটি ছবি পোস্ট করেন ডি মারিয়া। তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডি মারিয়ো লিখেন, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ বন্ধু। যখন আমরা কোপা আমেরিকা জিতেছিলাম তখন তুমি এটা বলেছিলে, অন্য পা এই মুহূর্তের জন্যই বাঁচিয়ে রাখ। এটা বিশ্বকাপ জয় লেখাই ছিল। এগিয়ে চলো আর্জেন্টিনা।’
গেল দেড় বছরে যে তিনটি মেজর শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা, তার প্রত্যেকটির ফাইনালে স্কোর করেছেন মারিয়া। তাই তার স্মৃতি ধরে রাখার পন্থাটাও অনন্য। গেল বছর কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলকে হারিয়ে ২৮ বছর পর শিরোপা জেতে আলবিসেলেস্তেরা। সেই ম্যাচে একমাত্র জয়সূচক গোলটি আসে ডি মারিয়ার পা থেকেই। সেই অর্জন ধরে রাখার জন্য বাঁ পায়ে শিরোপার ট্যাটু করিয়েছিলেন তিনি। ডান পা খালি ছিল তার বিশ্বকাপের জন্য।আর্জেন্টিনার দীর্ঘ ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান হয়েছে কাতারে। ঐতিহাসির এই অর্জনে অসীম অবদান ডি মারিয়ার। আগেই ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন, দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে না পারলে খুলে রাখবেন জাতীয় দলের জার্সি। দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আরো খেলা চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ফাইনালে দারুণ অবদান রেখেছিলেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ডি বক্সের মধ্যে তাকে ফাউল করার কারণে পেনাল্টি পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। সেই পেনাল্টি থেকে মেসির গোলে শুরুতেই লিড নেয় তারা।
এরপর ডি মারিয়া দারুণ দক্ষতায় দ্বিতীয় গোলটি করেন। যদিও পরে তাকে উঠিয়ে নেয়া হয় মাঠ থাকে। তবে আর্জেন্টিনার স্কোয়াডে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য থাকলেও চোটের কারণে খেলতে পারেননি নকআউটের ম্যাচগুলোতে। ফাইনালের আগেই ফাইনালে গোল করা এবং বিশ্বকাপ জেতার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ডি মারিয়া। ফাইনালের ২৪ ঘণ্টা আগে এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় ডি মারিয়া তার স্ত্রী জর্জেলিনা কারদোসোকে বলেছিলেন শিরোপা উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিতে। এমনকি ফাইনালে তিনি গোল করবেন সেটিও স্ত্রীকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন এই তারকা ফুটবলার। সেই আলাপের ছবি ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করেছেন কারদোসো নিজেই।
অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া ফাইনাল খেললে কখনো হারে না আর্জেন্টিনা। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে ছিলেন না এই তারকা স্ট্রাইকার। যে কারণে হয়তো জার্মানির কাছে শিরোপা হাতছাড়া করেছিল আলবিসেলেস্তে দল। কোপা আমেরিকায় ছিল ব্যতিক্রম, ফাইনালে গোল করেই জিতিয়েছেন শিরোপা, ডি মারিয়া জাল খুঁজে পেয়েছিলেন ইতালির বিপক্ষে ফিনালিসিমায়ও। এর আগে ২০০৭ সালে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ফিটনেস সমস্যা উৎরাতে না পারা ডি মারিয়া ছিলেন না একাদশে। চেক রিপাবলিকের বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শেষটায় শিরোপা হারতে বসেছিল আলবিসেলেস্তে দল। তবে শেষদিকে বদলি নেমে দলকে জেতান তিনি। ২০০৮ সালে বেইজিং গেমসের ফাইনালে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরার দিনে গোল পেয়েছিলেন ‘ফাইনালম্যান’। ২০০৮ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেক হয় তার। দেশের হয়ে খেলেছেন ১২৯টি ম্যাচ।
এসএম