বোমারু বিমান তৈরি করে তাক লাগালেন কলেজছাত্র

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার আলাদিপুর গ্রামের আড়ত ব্যবসায়ী আতিয়ার মোড়লের ছেলে বোরহান মোড়ল (১৮) সবেমাত্র স্কুল জীবন শেষ করে পা রেখেছেন কলেজে। তালা সরকারি ব্রজেন দে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পাশ করেছেন।

করোনার সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায় বোরহানের বাড়িতে অলস সময় কাটছিল। এ সময় কম্পিউটার ও মোবাইলের মাধ্যমে ইউটিউবে বিমান তৈরির ভিডিও দেখে ঘরে বসেই কটশিট, মোটর, ব্যাটারি ও বিভিন্ন ডিভাইস দিয়ে নিজের প্রচেষ্টায় তৈরি করে যুদ্ধবিমান।

কিন্তু কয়েক মাস উড়াতে ব্যর্থ হয়েও থেমে থাকেনি বোরহান। ৩০ থেকে ৩৫ বার বিমানটি উড়াতে ব্যর্থ হন তিনি। অবশেষে দীর্ঘ আট মাসের প্রচেষ্টা বাস্তবে রূপ পায় বোরহানের স্বপ্ন। ১০ অক্টোবর সর্বপ্রথম আকাশে ডানা মেলে উড়তে থাকে বোরহানের স্বপ্ন। রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে মনুষ্যবিহীন বোমারু বিমানটি বিকট শব্দে রানওয়েতে চক্কর দিয়ে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বিমানটি আকাশে উড্ডয়ন করে। শত্রুপক্ষের নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসতে সক্ষম এটি।

ব্যাটারিচালিত দ্রুতগামী এমন যুদ্ধ বিমান তৈরি করে জেলাবাসীকে অবাক করে দিয়েছেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজের শিক্ষার্থী বোরহান মোড়ল। বাড়ির পাশে নিজেদের রাইস মিলের চাতালকে বিমানের রানওয়ে হিসেবে ব্যবহার করে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে দ্রুতগতিতে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বিমানটি আকাশে উড্ডয়ন করতে সক্ষম হয়।

যুগান্তরের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মেধাবী কলেজছাত্র বোরহান মোড়ল বলেন, আমার এই বোমারু বিমানটি বর্তমানে তৈরি করতে আমার সময় লাগে এক সপ্তাহ। মনুষ্যবিহীন বোমারু বিমানটির ওজন এক কেজি। প্রথমে রিমোর্ট কন্ট্রোল বিমানে সফলতার পরে ১২ কেজি ওজনের বোমারু বিমান তৈরির কাজ চলমান আছে। বোরহান ধীরে ধীরে মনুষ্যবিহীন বৃহৎ যুদ্ধবিমান তৈরি করতে চায়- এ ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে একদিন মনুষ্যবিহীন বোমারু বিমান তৈরি করতে পারবেন এই মেধাবী কলেজছাত্র। ছেলের উদ্ভাবনে দারুণ খুশি বোরহানের মা বিউটি বেগম ও বাবা আতিয়ার মোড়ল।

তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের মাঠ দিবসে বোরহান তার উদ্ভাবিত বিমানটি উড্ডয়ন করে দেখিয়েছে উপস্থিত সবাইকে। ইতোপূর্বে উপজেলার বিজ্ঞান মেলাতে তিনি ভিন্ন ধরনের একটি বিমান প্রদর্শন করেন। তার এমন প্রতিভার জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি দেশের ও জেলার সবাইকে এমন কর্মযজ্ঞে উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি সহযোগিতা প্রদানের কথা বলেন।

LEAVE A REPLY