ঘন কুয়াশায় ফেরি বন্ধ থাকায় মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় অ্যাম্বুলেন্সে নজরুল ইসলাম মন্ডল (৬৫) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার ভোর ৬টায় পাটুরিয়ার ৪ নম্বর ঘাটে এ ঘটনা ঘটে। ঢাকায় চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়িতে নেওয়া হচ্ছিল। প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে কনকনে শীতে গাড়ীতে আটকে থাকায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে শীতে জনজীবন জবুথবু অবস্থা। দেশের কোথাও কোথাও সারা দিনই সূর্যের দেখা মিলছে না। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষ চরম কষ্টে আছেন। রাজশাহীতে রোববার সন্ধ্যায় তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। কুয়াশার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলছে ধীর গতিতে। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
মানিকগঞ্জ : বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয় এবং ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঘন কুয়াশার কারণে সাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথে শনিবার রাত আড়াইটা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাতে ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে নজরুল ইসলামকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মেহেরপুরের গাংনীতে নিয়ে যাচ্ছিলেন স্বজনরা। রাত ৩টার দিকে পাটুরিয়ার ৪ নম্বর ফেরিঘাটে এসে আটকা পড়েন তারা। সকাল ৬টার দিকে কনকনে শীতে নজরুল ইসলাম মারা যান। তিনি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মৃত নবী মণ্ডলের ছেলে। বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক সালাম মিয়া বলেন, রোববার সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। ফেরি চালু হলে স্বজনরা নজরুলের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যান।
রাজশাহী : কনকনে শীত ও কুয়াশা বৃষ্টির কারণে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের ছয় জেলায় জনজীবন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রোববার রাজশাহীতে সারাদিনই সূর্যের দেখা মেলেনি। দিনের মধ্যভাগে কুয়াশার ঘনত্ব কিছুটা কমলে কিছু সময়ের জন্য মানুষের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সকালে সর্বনিু তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হলেও সন্ধ্যায় তা নেমে আসে ১১ ডিগ্রিতে। ফলে দিনের শেষে শীতের তীব্রতা আরও বাড়ে। এদিকে ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় পশ্চিমাঞ্চল রেলের বিভিন্ন লাইনে দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে ট্রেন চলেছে। ধীরগতিতে ট্রেন চলায় শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। রাজশাহী, খুলনা, দিনাজপুর, রংপুর লাইনের প্রতিটি ট্রেন সর্বনিম্ন দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে চলাচল করেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী দূরপাল্লার পরিবহণও কয়েক ঘণ্টা বিলম্বে চলেছে। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে ঘনকুয়াশায় সড়ক মহাসড়ক ও নদী অববাহিকায় দৃষ্টিসীমা ১০০ মিটারের মধ্যে নেমে আসার সম্ভাবনা আছে।
চান্দিনা (কুমিল্লা) : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহন চলেছে ধীর গতিতে। যানবাহনের সংখ্যাও ছিল তুলনামূলক কম। চান্দিনার কাঠেরপুল পেট্রলপাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকচালক আফজাল হোসেন বলেন, আমার গাড়ির হেড লাইটের আলো কম। এই কুয়াশায় এক কিলোমিটারও যাওয়া সম্ভব না। তাই গাড়ি পার্কিং করে বসে আছি। ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শক ওবায়েদুল হক বলেন, কুয়াশায় গাড়ি চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। আমরা গাড়ি চালকদের নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে এবং ফগ লাইট ব্যবহার করে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দিচ্ছি।