৪০০ রুশ সেনা হত্যার দাবি ইউক্রেনের

ইউক্রেনের ভাষ্যমতে তাদের হামলার শিকার রুশ সেনাদের অবস্থান করা ভবনটি-ছবি:বিবিসি

রাশিয়ার দখলকৃত দোনেত্স্ক অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে প্রায় ৪০০ রুশ সেনা হত্যার দাবি করেছে ইউক্রেন। মাকিভকা শহরের একটি ভবন লক্ষ্য করে ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। বলা হচ্ছে, ভবনটিতে রুশ সেনাদের অবস্থান করার তথ্য ছিল কিয়েভের কাছে।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর মতে, আনুমানিক ৪০০ জন রুশ সেনা নিহতের পাশাপাশি ৩০০ আহত হয়েছে।

অধিকৃত দোনেেস্কর রুশপন্থী কর্তৃপক্ষ হত্যাহতের কথা স্বীকার করলেও কিয়েভের দাবি করা নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেনি।

রাশিয়ার নিযুক্ত করা দোনেত্স্ক প্রশাসন জানিয়েছে, নববর্ষের প্রাক্কালে রাতভর ওই অঞ্চলে অন্তত ২৫টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। দুই পক্ষই জানিয়েছে, ভবনটিতে হতাহতদের মধ্যে সম্প্রতি যুদ্ধে যোগ দেওয়া রাশিয়ার রিজার্ভ সেনাদের সংখ্যাই বেশি ছিল। এই হামলাকে ইউক্রেন যুদ্ধের অন্যতম প্রাণঘাতী ঘটনা বলা হচ্ছে।

দোনেেস্কর দখলকৃত অংশের জ্যেষ্ঠ রুশ সমর্থিত কর্মকর্তা দানিল বেজসোনভ বলেন, নববর্ষের প্রাক্কালে মধ্যরাতের পর ক্ষেপণাস্ত্রটি মাকিভকাতে আঘাত হানে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো এমএলআরএস হিমারস দিয়ে বৃত্তিমূলক শিক্ষার স্কুলটিতে হামলা করা হয়। হতাহতের সঠিক সংখ্যা অজানা জানিয়ে টেলিগ্রামে একটি পোস্টও করেন তিনি।

রাশিয়ার উপস্থাপক ভ্লাদিমির সলোভিভ টেলিগ্রামে লেখেন, ‘(হামলায়) উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে… তবে (নিহতের সংখ্যা) ৪০০-এর কাছাকাছিও নয়। ’

মাকিভকাতে ভবন ধ্বংসের কয়েক ঘণ্টা পরই কিয়েভে হামলা চালায় রাশিয়া। ইউক্রেনের রাজধানীর আঞ্চলিক গভর্নর ওলেক্সি কুলেবা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে সোমবার হামলা হয়েছে। ’ ড্রোনের অংশবিশেষের আঘাতে একজন আহত হয়েছে বলে জানান তিনি। কিয়েভ ও পূর্ব ইউক্রেনজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতাও জারি করা হয়।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, গত রবিবার রাতে ইরানের তৈরি ৩৯টি সাহেদ ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেন, নববর্ষের রাতে ৪৫টি ড্রোন ভূপাতিত করেছেন তাঁরা।

যুদ্ধে দৃঢ় মনোবল দেখানোয় ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রশংসা করেন জেলেনস্কি। রাশিয়ার সব প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। জেলেনস্কি বলেন, ‘ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র কিংবা অন্য কোনো কিছুই তাদের কাজে আসবে না। কারণ আমরা একতাবদ্ধ। ’

এদিকে ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কিত তথ্যও প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। কিয়েভের দাবি, গত বছর এক লাখ সাত হাজার ৪৪০ জন রুশ সেনা হত্যা করা হয়েছে। তাদের ২৮৩টি যুদ্ধবিমান ও তিন হাজার ট্যাংকও ধ্বংসের দাবি করেছে ইউক্রেন।

সর্বশেষ পাঁচ দিন ধরে পি৬৬ মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুদ্ধ করছে রাশিয়া-ইউক্রেন। দনবাসের দখলকৃত অঞ্চলে অস্ত্র সরঞ্জাম পাঠাতে এই মহাসড়ক ব্যবহার করে মস্কো। সূত্র : বিবিসি ও গার্ডিয়ান

LEAVE A REPLY