ফলাফল ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন। ছবি: ভোরের কাগজ
গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন ৭৮২৮৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী এএইচএম গোলাম শহীদ পেয়েছেন ৪৪৯৫০ ভোট। আজ ভোর রাতে দুই উপজেলা প্রাপ্ত ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার মো. ফরিদুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন। অন্য তিন প্রার্থীর মধ্যে বিকল্পধাবার বাংলাদেশের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম পেয়েছেন ১৭৯৬ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ২৯৫০ ভোট এবং নাহিদুজ্জামান নিশাদ ১৬৪০ ভোট পেয়েছেন। বেসরকারি ভাবে ফলাফল ঘোষনার পূর্ব মূহুর্তে জেলা রিটার্নিং ও দুইজন সহকারি রিটার্নিং অফিসার ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হওয়ায় সাঘাটা-ফুলছড়ির জনগণসহ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
নবনির্বাচিত এমপি মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, আমি ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সাঘাটা-ফুলছড়ির উন্নয়নে কাজ করছি। এই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকেছি। তিনি বলেন, এই নির্বাচন একটি ইতিহাস হয়ে থাকবে। আজকে সর্বমহলে নির্বাচন প্রশংসা কুড়িয়েছে। আজকের বিজয় প্রমাণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এদেশের একটি জনপ্রিয় দল। জননেত্রী শেখ হাসিনা এদেশের মানুষের জন্য যা করছেন, আমাদের সাঘাটা-ফুলছড়ির জন্য যে উন্নয়ন করেছেন তারই প্রতিফলন ঘটেছে আজকের এই নির্বাচনে।
তিনি বলেন, আগামী দিনে অনেকগুলো কাজ কয়েছে। সাঘাটা-ফুলছড়িকে যমুনার ভাঙন হতে রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক কাজ করতে হবে। চরাঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করার কথা জানান তিনি।
ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ফুলছড়ি উপজেলায় গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব ও সাঘাটা উপজেলায় নওগাঁ জেলার নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম সহকারি রিটানিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ করতে দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রের সবগুলোতেই ছিলো সিসি ক্যামেরা। নির্বাচনের কাজে মাঠে থাকছে র্যাবের বোম ডিসপোজাল ইউনিট ৯টি টিম, ৫ প্লাটুন বিজিবি, ৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ১৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, দুইজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে ৬টি মোবাইল টিম।
গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের স্থগিত হওয়া উপনির্বাচন নতুন করে ১৪৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করা হয়। ৯৫২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ১ হাজার ৯০৪ জন পোলিং অফিসারের কোন পরিবর্তন করা হয়নি। এই আসনের ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে ৯৫২টি বুথে ইভিএম ভোট গ্রহণ করা হয়। দুই উপজেলায় সমতলে ১১৩টি ও চরাঞ্চলে ৩২টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহন করা হয়।
ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ফুলছড়ি উপজেলায় গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব ও সাঘাটা উপজেলায় নওগাঁ জেলার নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম সহকারি রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন।
গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন নৌকা প্রতীক, জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু লাঙ্গল প্রতীক, বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম কুলা প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মো. মাহবুবুর রহমান ট্রাক প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে আপেল প্রতীকের অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
গত বছরের ২৩ জুলাই জাতীয় সংসদের প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে আসনটি শুন্য হয়। গত ১২ই অক্টোবর বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। দুইদফা তদন্ত শেষে গতকাল ৪ জানুয়ারি পুনরায় এই আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।এমক