ইরানে বিক্ষোভ চলাকালে এক সেনা সদস্যকে হত্যার অভিযোগে দুই জনকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে।
শনিবার ওই দুই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি নামের এক কুর্দি তরুণীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেওয়া হয় এই তরুণীকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান মাহসা আমিনি।
পুলিশি নির্যাতনে আমিনির প্রাণহানি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এই ঘটনার পর ইরানে গত তিন বছরের মধ্যে বৃহত্তম বিক্ষোভ শুরু করেছেন দেশটির হাজার হাজার মানুষ।
ইরানের এই সহিংসতায় এখন পর্যন্ত কয়েক ডজন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের বেশিরভাগই বিক্ষোভকারী। তবে নিহতদের মধ্যে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সাথে সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী বাসিজ মিলিশিয়া বাহিনীর এক সদস্যকে হত্যার দায়ে শনিবার ওই দুই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। একই মামলায় অন্য তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়েছে। দেশটিতে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনের অভিযানে সম্মুখসারিতে রয়েছে বাসিজ মিলিশিয়া গোষ্ঠী।
ইরানের বিচারবিভাগের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ বলেছে, বাসিজের সদস্য রুহুল্লাহ আজমিয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মুহাম্মদ মেহেদি কারামি ও সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেইনিকে শনিবার সকালের দিকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
দেশটিতে চলমান বিক্ষোভে সহিংসতা চালানোর দায়ে এখন পর্যন্ত মোট চারজন বিক্ষোভকারীর ফাঁসির কার্যকর করা হয়েছে। গত মাসে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ইরানি কর্তৃপক্ষ কমপক্ষে ২৬ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা চাইছে। দেশ কাঁপানো গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রতিবাদকারীদের ভয় দেখানোর জন্য প্রহসনমূলক বিচারের নীলনকশা করা হয়েছে বলে নিন্দা জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা।
এইচআরএএনএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া ইরানের বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ১৯ হাজার ২৬২ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।