কিলিয়ান এমবাপ্পে
লিগ ওয়ানের ম্যাচে মপেলিয়ের বিপক্ষে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে ২১ মিনিটে মাঠ ছাড়েন তারকা ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে। সেই চোটের কারণে তিন সপ্তাহের জন্য ছিটকে যান তিনি। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হবে পিএসজি। তবে এমবাপ্পের এই চোটকে পাতানো ফাঁদ মনে করছেন বায়ার্ন কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমান। এই ব্যপারে আগে থেকেই সতর্ক তিনি।
এমবাপ্পের চোট পাওয়ার ম্যাচে মঁপেলিয়েকে ৩-১ গোলে হারায় পিএসজি। সেই ম্যাচে এমবাপ্পের পাশাপাশি চোটে আক্রন্ত হন ডিফেন্ডার সার্জিও রামোস। ম্যাচ শুরুর ১০ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় ক্রিস্টফ গালতেয়ার শিষ্যরা। তবে স্পট কিক থেকে এমবাপ্পের নেয়া শট রুখে দেন মন্টিপিলিয়ারের গোলরক্ষক বেঞ্জামিন লেকোমটে। তবে কিক নেয়ার আগে নিজের জায়গা থেকে সড়ে আসায় আবারো পেনাল্টি শট নিতে বলেন রেফারি। দ্বিতীয় দফায় এমবাপ্পের শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। এরপর ম্যাচের ২১ মিনিটে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ত্যাগে বাধ্য হন এই ফরাসি স্ট্রাইকার।
এমবাপ্পে মাঠ ছাড়ার সময় বোঝা যাচ্ছিল না তার চোট কতটা গুরুতর। মেডিকেল পরীক্ষার পর জানা গেছে, তিন সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে ২৪ বছর বয়সি এই ফরাসি ফরোয়ার্ডকে। এক বিবৃতিতে পিএসজি জানায়, ‘পরীক্ষার পর দেখা গেছে, কিলিয়ান এমবাপ্পে বাঁ ঊরুর পেশিতে চোট পেয়েছে। সম্ভবত তাকে তিন সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে।’ এ চোটে চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে প্রথম লেগে তাঁর না খেলার বিষয়টিও নিশ্চিত হয়।
তবে এমবাপ্পের চোট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন নাগেলসমান। সম্প্রতি এক স্বাক্ষাৎকারে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না তার কী হয়েছে। তবে আমি আশা করছি সে খেলবে। তারা তাদের ওয়েবসাইটে খুবই অস্পষ্টভাবে লিখেছে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত মাঠের বাইরে থাকবে সে। যদি তার চোট জটিল না হয় তবে আমার মনে হয় না সে ম্যাচ মিস করবে। সে খেলছে এটা ধরে নিয়েই আমরা প্রস্তুতি নেব। যদি মারাত্মক চোট না হয় তবে সে মাঠে থাকবে না সেটা এখন বলা অনেক দূরের ব্যাপার।’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবশেষ ২০১৭ সালে বায়ার্নকে হারিয়েছিল পিএসজি। এবার জয়ের জন্য সর্বোচ্চ কৌশলই অবলম্বন করতে চাইবে তারা। ২০১৭ সালের পর ২০২০ ও ২০২১ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তিনবার দেখা হয়েছে পিএসজি-বায়ার্ন মিউনিখের। তবে কোন বারেই জয়ের মুখ দেখেনি লা প্যারিসিয়ানরা। চ্যাম্পিয়নস লিগে মোট ৫ বারের দেখায় পিএসজির জয় দুইটিতে এবং তিনটিতে জয় পেয়েছে বায়ার্ন।
গত ৭ সেপ্টেম্বর সুইজারল্যান্ডের নিওনে উয়েফার সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত হয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ড্র। গ্রুপপর্ব থেকে ১৬টি দল অংশ নেয় শেষ ষোলোতে। উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী, গ্রুপপর্ব থেকে উঠে আসা একই গ্রুপের দুই দল মুখোমুখি হতে পারবে না। কোনো লিগের দুই দলও শেষ ষোলোয় একে অপরের মুখোমুখি হতে পারবে না। আগেই ধারণা করা হয়েছিল এবারের আসরে কঠিন প্রতিপক্ষ পাবে লিভারপুল ও পিএসজি। প্রতিপক্ষ হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদকে পেয়েছে লিভারপুল এবং বায়ার্ন মিউনিখকে পেয়েছে পিএসজি। আট গ্রুপের এই খেলায় এ-গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নাপোলি ও রানার্সআপ হয়ে লিভারপুল উঠে শেষ ষোলোয়। একই ভাবে বি-গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এফসি পোর্তো ও রানার্সআপ হয়ে ব্রুগা, সি-গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বায়ার্ন মিউনিখ ও রানার্সআপ হয়ে ইন্টার মিলান, ডি-গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে টটেনহাম ও রানার্সআপ হয়ে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট, ই-গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে চেলসি ও রানার্সআপ হয়ে এসি মিলান, এফ-গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ও রানার্সআপ হয়ে লাইপজিগ, জি-গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ম্যানচেস্টার সিটি ও রানার্সআপ হয়ে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড এবং সর্বশেষ এইচ-গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোল নিশ্চিত করে বেনফিকা ও রানার্সআপ হয়ে পিএসজি।
ড্রতে আরবি লাইপোজিগ খেলবে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে। ক্লাব ব্রুগা মাঠে নামবে বেনফিকার বিপক্ষে। লিভারপুল খেলবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে। এসি মিলান খেলবে টটেনহ্যামের বিপক্ষে। ফ্রাঙ্কফুর্ট খেলবে নাপোলির বিপক্ষে। ব্রুশিয়া ডর্টমুন্ড খেলবে চেলসির বিপক্ষে। ইন্টার মিলান খেলবে পোর্তোর বিপক্ষে। পিএসজি খেলবে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে। ফিফা বিশ্বকাপের বিরতি কাটিয়ে জানুয়ারিতে ক্লাব ফুটবল মাঠে ফিরলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মাঠে গড়াবে ফেব্রুয়ারিতে। আগামী ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারির পর ২২ এবং ২৩ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে শেষ ষোলোর প্রথম লেগের খেলা। আর ৮ ও ৯ মার্চের পর ১৫ ও ১৬ মার্চ হবে দ্বিতীয় লেগের খেলা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ষোলোর সূচি
তারিখ দল ভেন্যু সময়
১৫ ফেব্রুয়ারি পিএসজি-বায়ার্ন মিউনিখ পার্ক দে প্রিন্সেস রাত দুইটা
১৫ ফেব্রুয়ারি এসি মিলান-টটেনহ্যাম সান সিরো রাত দুইটা
১৬ ফেব্রুয়ারি ক্লাব ব্রুগা-বেনফিকা জান ব্রেইডেল রাত দুইটা
১৬ ফেব্রুয়ারি ব্রুশিয়া ডর্টমুন্ড-চেলসি সিগন্যাল ইদুনা রাত দুইটা
২২ ফেব্রুয়ারি লিভারপুল-রিয়াল মাদ্রিদ অ্যানফিল্ড রাত দুইটা
২২ ফেব্রুয়ারি ফ্রাঙ্কফুট-নাপোলি ডয়েচ ব্যাংক রাত দুইটা
২৩ ফেব্রুয়ারি লাইপোজিগ-ম্যানচেস্টার সিটি রেড বুল অ্যারোনা রাত দুইটা
২৩ ফেব্রুয়ারি ইন্টার মিলান-পোর্তো সান সিরো রাত দুইটা
০৮ মার্চ চেলসি-ব্রুশিয়া ডর্টমুন্ড স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ রাত দুইটা
০৮ মার্চ বেনফিকা-ক্লাব ব্রুগা দ্যা লুজ রাত দুইটা
০৯ মার্চ বায়ার্ন মিউনিখ-পিএসজি অ্যালিয়াঞ্জ এরিনা রাত দুইটা
০৯ মার্চ টটেনহ্যাম-এসি মিলান টটেনহ্যাম রাত দুইটা
১৫ মার্চ পোর্তো-ইন্টার মিলান ড্রাগাও রাত দুইটা
১৫ মার্চ ম্যানচেস্টার সিটি-লাইপোজিগ ইত্তেহাদ রাত দুইটা
১৬ মার্চ নাপোলি-ফ্রাঙ্কফুট ম্যারাডোনা রাত দুইটা
১৬ মার্চ রিয়াল মাদ্রিদ-লিভারপুল সান্তিয়াগো বার্নাব্যু রাত দুইটা
ডি- এইচএ