তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে আড়াই কোটি লোক ক্ষতিগ্রস্ত: ডব্লিউএইচও

ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ায় বিধ্বংসী এক ভূমিকম্পে পাঁচ সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যুর পর সেখানে আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রচেষ্টা জোরদার করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমান করছে, তুরস্ক ও সিরিয়াব্যাপী প্রায় আড়াই কোটি বেসামরিক লোক এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, দুই দেশ মিলিয়ে তাদের হিসাবে অনুযায়ী, দুই কোটি ৩০ লাখ মানুষ ভূমিকম্পের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি শিশু রয়েছে বলে ডাব্লিউএইচও’র জ্যেষ্ঠ জরুরি কর্মকর্তা অ্যাডেলহেইড মার্শাংয়ের আগে জাতিসংঘ স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী কমিটিকে জানিয়েছেন। খবর বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ানের।

তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় জানিয়েছেন, তুরস্কের মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে তিন হাজার ৪১৯-এ উপনীত হয়েছে। এছাড়া, আরো ২০ হাজার ৫৩৪ জন আহত হয়েছে ও প্রায় ছয় হাজার ভবন ধসে পড়েছে। অন্যদিকে সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬০২।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এএফএডি হালনাগাদ পরিসংখ্যানে জানিয়েছে, ২৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি জরুরি কর্মী অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করছেন। তবে এই শীত মৌসুমে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেলে উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা অ্যানা ফস্টার তুরস্কের ওসমানিয়া শহর থেকে ধ্বংসস্তূপের বর্ণনা দিয়েছেন। এই শহরটি ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছেই। তিনি বলেছেন, ‘বৃষ্টির কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। রাতে শহরটিতে কোনো বিদ্যুৎ ছিল না।’

প্রসঙ্গত, সোমবার ভোররাতে গাজিয়ানতেপের কাছে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে আরো একটি ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। কর্মকর্তারা বলেছেন, এটি ‘আফটারশক’ ছিল না।

এই জায়গায় কেন ভূমিকম্প?

তুরস্ক পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলগুলোর একটিতে অবস্থিত। এর আগে ১৯৯৯ সালে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৭ সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছিল।

সর্বশেষ ভূমিকম্পটি ঘটেছে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পশ্চিমমুখী ‘পূর্ব আনাতোলীয় ফল্ট’-এর চারপাশে। সিসমোলজিস্টরা দীর্ঘ দিন ধরে বলে আসছেন, এই ফল্টটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। যদিও বিগত ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেখানে কোনো উল্লেখযোগ্য ভূকম্পন হয়নি।

তবে অতীতে এই এলাকায় কিছু মারাত্মক ভূমিকম্প হয়েছে। বিশেষ করে, ১৮৮২ সালের ১৩ আগস্ট সেখানে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল, যা আজকের রেকর্ড করা ৭ দশমিক ৮ মাত্রার চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। তা সত্ত্বেও, ১৯ শতকের সেই ভূমিকম্পে অনেক শহরের প্রচুর ক্ষতি হয় ও আলেপ্পো শহরে সাত হাজার বেসামরিক লোকের মৃত্যু হয়। এছাড়া, শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পের আফটারশক চলতে থাকে প্রায় এক বছর ধরে।ডি- এইচএ

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY