শত্রুঘ্ন সিনহা ও নরেন্দ্র মোদি
বলিউডের একসময়ের প্রভাবশালী অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। সত্তর ও আশির দশকে পর্দা কাঁপিয়েছেন। ছিলেন অ্যাকশনের জন্য সর্বাধিক জনপ্রিয় একজন নায়ক। তার মুখে ‘খামোশ’ শুনে ভয়ে কেঁপে উঠতেন ভিলেনরা! তবে রুপালি পর্দার পাশাপাশি রাজনীতির আঙিনাতেও অবাধ বিচরণ তাঁর। রাজনীতির ময়দানে বিরোধীকে ঘায়েল করতে নিজের ছবিতে ব্যবহৃত শব্দকেই হাতিয়ার করলেন আসানসোলের তারকা সংসদ সদস্য ও বলিউড তারকা শত্রুঘ্ন সিনহা। তাঁর কথা শুনে রামপুরহাটের পাঁচমাথার মোড়ের জনসভায় হাততালি যেন থামতেই চায় না!
শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করেন তা জনহিতে করেন। মানুষের ভালো হোক এই চিন্তায় তিনি সব সময় ব্যস্ত থাকেন। আর বিজেপি সরকার সব সময় নির্বাচনমুখী কাজ করে। মানুষকে ঠকিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে।’ নিজের বক্তব্যের সপক্ষে উদাহরণ দিতে গিয়ে তাঁর নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘পৌনে তিন লাখ ভোটে বিজয়ী হলেও আসলে তা পাঁচ লাখের সমান। কারণ বাবুল সুপ্রিয় দুই লাখের ওপরে ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন। সেই ব্যবধান ঘুচিয়ে উপনির্বাচনে তিন লাখে জয়, আসলে পাঁচ লাখের জয় বলেই ধরে রাজনৈতিক মহল।’
সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করে শত্রুঘ্ন করেন, ‘আমার বন্ধু নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু আজ তাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলতে হচ্ছে। কারণ তিনি যা করছেন তাতে দেশের ভালো হচ্ছে না। বন্ধুর চেয়ে দেশ বড়। নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, প্রতি ঘরে বিনা পয়সায় গ্যাস হবে। প্রতি ঘরে আলো পৌঁছবে। কিছু পেয়েছেন? কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা যা বলেছেন তার সবই হয়েছে। তা বাচ্চাদের শিক্ষা হোক, বিশ্ববিদ্যালয় হোক, তফসিলি জাতি, উপজাতিদের সমস্যা হোক। বাজেটে প্রধানমন্ত্রী কী দিয়েছেন? দুধের দাম বেড়ে গিয়েছে। পেট্রল-ডিজেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। টাকার মূল্য কত পড়েছে। ব্যবসায়ীদের আর্থিক মন্দা কাটাতে কিছু করেছেন? কৃষকদের জন্য কিছু করেছেন? আদিবাসী উন্নয়নে? মধ্যবিত্তদের জন্য কী করেছেন? যত দিয়েছেন তার থেকে বেশি কেড়ে নিয়েছেন। তাই এই নির্বাচনী বাজেটকে সামনে রেখে বিজেপি যত এগোতে যাবে ততই তাদের বিপদ বাড়বে।’
আদানি প্রসঙ্গেও কেন্দ্রের জবাব চেয়ে শত্রুঘ্নর প্রশ্ন, ‘আদানি দোষী কিনা বলতে পারছি না। কিন্তু তিনি যে নির্দোষ এই গ্যারেন্টি কে দিচ্ছে? প্রধানমন্ত্রীর সততা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়ে গেছে। বিশ্বে ২০১৪ সালে ৬০৯ নম্বরে ছিল আদানি। ২০২৩ সালে কী করে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি হলো? কেন্দ্র তার কী জবাব দেবে? ডিজেল, গ্যাস, বন্দর কী করে একই ব্যক্তির হাতে গেল? কেন্দ্রকে তার জবাব দিতে হবে। এর তদন্ত করা উচিত।’
যদিও শত্রুঘ্ন সিনহার এমন বক্তব্যের পর বিজেপির পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন