ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশের ‘গ্রীন টেক্সটাইল লিমিটেড’। আগে এই স্বীকৃতি ছিল ইন্দোনেশিয়ার। গ্রীন টেক্সটাইল ইউনিট চারের এই অর্জন, বিশ্বে বাংলাদেশের পোশাক খাতকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। প্রতিষ্ঠানটি ১১০ নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০৪ নম্বর পেয়েছে। এর ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) গ্রীন টেক্সটাইল লিমিটেডকে ‘লিড প্লাটিনাম’ সনদে ভূষিত করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এপিক গ্রুপ ও বাংলাদেশের এনভয় লিগ্যাসি গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় গড়ে উঠেছে।
পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরিতে, ইউএসজিবিসির গ্রিন বিল্ডিং রেটিং সিস্টেমে ‘লিড’ বিশ্বের সবচেয়ে স্বীকৃত সনদ। আর প্লাটিনাম হচ্ছে লিড সনদ কর্মসূচির সর্বোচ্চ রেটিং বা মূল্যায়ন। ৫৪ হাজার স্কয়ার ফিটের কারখানাটি ‘অনন্য’ তার নকশা নির্মাণ শৈলী ও দক্ষ ব্যবস্থাপনায়। কারখানাটি এমনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ঠিকমতো প্রতিপালিত হয় প্রাকৃতিক উৎসের ওপর নির্ভর করে। ব্যবসার পাশাপাশি পরিবেশের প্রতি উদ্যোক্তাদের অঙ্গীকার কতটা গ্রীন টেক্সটাইল লিমিটেড তার সেরা উদাহরণের একটি।
কারখানাটি নির্মাণের সময় পরিবেশবান্ধব উপকরণের ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে এবং পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার চর্চার ওপর জোর দিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। যার ফল হিসেবে স্থিতিশীলতা, পানি ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি দক্ষতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩২ নম্বর পেয়েছে ৩৩-এর মধ্যে। কারখানাটিতে দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে পরিবেশের মূল নীতিগুলো সকলেই মেনে চলছে।
গ্রীন টেক্সটাইলের পানি ব্যবস্থাপনা অসাধারণ।এখানে বৃষ্টির পানি ও খোলা জায়গা ব্যবস্থাপনা সাধারণের মানের চেয়ে অনেক ওপরে। ফল হিসেবে কারখানাটিতে পানি ব্যবহারের দক্ষতা ৬৫ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। এছাড়া, অ্যাডভান্স মিটারিং সিস্টেম (এএমএস) দ্বারা প্রতিনিয়ত জ্বালানি, পানি ও বাষ্প পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এসবের অপচয় কমিয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করা হয়।
জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে গ্রীন টেক্সটাইল শুরু থেকেই সবুজ জ্বালানি ব্যবহারে জোর দিয়েছে। যে কারণে পুরো কারখানার ৮০ শতাংশই সোলার ব্যবস্থাপনার আওতায়। এখানে প্রায় এক মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হয় সোলার প্যানেলের মাধ্যমে। বহুমুখী উপযোগিতার কারণে সর্বোচ্চ মানের কাজের পরিবেশ, দক্ষতা উন্নয়ন, ভালোমানের বাতাস, অফুরন্ত প্রাকৃতিক আলো নিশ্চিত হয়েছে গ্রীন টেক্সটাইলে। কারখানাটি সত্যিকার অর্থে ‘পরিবেশ বন্ধু’ বা পরিবেশের বন্ধু; যা নিশ্চিত করেছে পরিবেশ-বান্ধব আদর্শ কর্মপরিবেশ। কারখানাটি বাংলাদেশের সকল খাতকে অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে খাত সংশ্লিষ্টদের বিশ্বাস।
গ্রীন টেক্সটাইলের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একদিকে রয়েছেন এপিক গ্রুপের চেয়ারম্যান রনজু মাহাতানি, ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দিনেশ ভিরওয়ানি ও সুনীল দারিয়া নানি। অন্যদিকে রয়েছেন কুতুবউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যান গ্রীন টেক্সটাইল লিমিটেড ও এনভয় লিগ্যাসি গ্রুপ, তানভীর আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রীন টেক্সটাইল লিমিটেড ও এনভয় লিগ্যাসি গ্রুপের পরিচালক বিজিএমইএ ও এমসিসিআই।ডি- এইচএশেয়ার করুন