গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি নতুন মেট্রোরেল হচ্ছে

প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এমআরটি-৫ এর দক্ষিণ লাইন বা নতুন মেট্রোরেল নির্মাণ করবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এই প্রকল্পে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। আর ২ হাজার কোটি টাকা সহায়তা করবে বাংলাদেশ সরকার। রোববার রাজধানী ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এমআরটি-৫ এর দক্ষিণ লাইনের কর্মশালায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা এসব তথ্য জানান।

তারা জানান, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। আর ২০৩০ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এই মেট্রোরেল চালু হলে দৈনিক ১০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। এ প্রকল্পটি-গাবতলী থেকে আফতাব নগর আবাসিক এলাকা হয়ে দাশেরকান্দি পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার মেট্রোরেল প্রকল্পটি উড়াল ও পাতাল দুইভাবেই নির্মিত হবে। গাবতলী থেকে আফতাব নগর পর্যন্ত ১২ দশমিক ৮০ কিলোমিটার পাতালপথে এবং আফতাব নগর থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত ৪ দশমিক ৬০ কিলোমিটার উড়ালপথে নির্মিত হবে। ১৬টি স্টেশনের মধ্যে ১২টি পাতাল এবং চারটি উড়াল হবে। স্টেশনগুলো হবে-গাবতলী, টেকনিক্যাল মোড়, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলেজগেট, আসাদগেট, রাসেল স্কয়ার, পান্থপথ, সোনারগাঁও হোটেল, হাতিরঝিল পশ্চিম, নিকেতন, রামপুরা, আফতাবনগর পশ্চিম, আফতাবনগর মধ্য, আফতাবনগর পূর্ব, দাশেরকান্দি। এছাড়া আফতাবনগর পশ্চিম, আফতাবনগর মধ্য, আফতাবনগর পূর্ব, দাশেরকান্দি চারটি উড়াল স্টেশন করা হবে। বাকিগুলো পাতাল স্টেশন করা হবে। এমআরটি-৫ এর দক্ষিণ লাইনের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল ওয়াহাব বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৫৪টি সেবা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। উঠানামার কোনো পথ যেন ফুটপাতে না পড়ে সে বিষয়গুলো নিখুঁতভাবে দেখা হয়েছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাব্য ব্যয় চিন্তা করা হয়েছে প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা। ১০২ টাকা ডলারের মূল্য ধরে এমন হিসাব করা হয়েছে। এরমধ্যে এডিবি দেবে ৪৫ হাজার কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ২ হাজার কোটি টাকা। তবে কাজ শুরুর সময় ডলারের মূল্যের ওপর নির্ভর করবে সর্বমোট খরচ কত দাঁড়াবে।

কর্মশালায় সভাপতির বক্তৃতায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক বলেন, এমআরটি লাইন-৫ নির্মাণে এডিবি’র কাছে আমরা আরও ৩০০ মিলিয়ন ডলার চাই। এটা হলে আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নে সুবিধা হবে। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন (৪৭০ কোটি) মার্কিন ডলার ব্যয় হবে বলে জানায়। এরমধ্যে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন (২৫০ কোটি) মার্কিন ডলার অর্থায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে এডিবি। এদিকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী দাবি করেছেন, ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট লাইন-১ এর নির্মাণ কাজের কারণে নবনির্মিত পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে ভাঙার খবর সঠিক নয়। এটা বাস্তবায়নে বড় কোনো ক্ষতি হবে না। এমআরটি লাইন-১ নির্মাণের কারণে সামান্য ক্ষতি হতে পারে। এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক দ্বীপগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু এটি বলা মোটেও সমীচীন নয় যে, পুরো রাস্তাটি ভেঙে ফেলতে হবে। কর্মশালায় দাতা সংস্থার প্রতিনিধি ছাড়াও সংশ্লিষ্ট ৫৪ সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY